সুইজারল্যান্ড এবং বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্রমশ বাড়ছে। সুইস পরিসংখ্যান অনুসারে দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্য ২০১০ সাল থেকে তিনগুণ বেড়ে গত বছর ৮৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে। সুইজারল্যান্ডের বেশির ভাগ বহুজাতিক সংস্থা এবং বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুদেশের ইন্টার-এজেন্সি কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বাংলাদেশ পক্ষে নেতৃত্ব দেন। আর সুইস ফেডারেল কাউন্সিলের বাণিজ্য চুক্তিবিষয়ক প্রতিনিধি এবং অর্থনৈতিক মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান রাষ্ট্রদূত এরউইন বোলিঙ্গার সুইস প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। তিনি সুইজারল্যান্ডের বার্ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন।
ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শিউআখ।
সুইস বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীরা যেসব বাধার সম্মুখীন হয় তা চিহ্নিত ও নিরসন এবং উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সরকার এ ইন্টার-এজেন্সি কমিটি গঠন করে। গত বছরের এপ্রিলে কমিটির সাথে সুইজারল্যান্ডের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আজ সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদানের সময় বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল রয়েছে। রপ্তানি স্বাভাবিক গতিতে ফিরে এসেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে। ইউরোপীয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশকে আরও কয়েক বছর প্রিফারেনশিয়াল মার্কেট অ্যাক্সেস দেয়ার নীতি গ্রহণ করেছে। সুইজারল্যান্ডও একই নীতিতে বাংলাদেশকে প্রিফারেনশিয়াল মার্কেট অ্যাক্সেস প্রদান করবে বলে আশা করছি।’
উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ আছে এবং ভবিষ্যতে তা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ১০৬.৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য সুইজারল্যান্ডে রপ্তানি করেছে। একই সময়ে ২৮৮.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে।
বেসরকারি খাতকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে উভয় দেশ লাভবান হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় রাষ্ট্রদূত এরউইন বোলিঙ্গার দুদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভবিষ্যত সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের দুদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক বিদ্যমান যা পরস্পরের জন্য লাভজনক। বিগত বছরগুলোতে এ সম্পর্কে একটি ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা গেছে।’
বৈঠকে উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ইতিবাচক উন্নয়নকে স্বাগত জানিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে। সেই সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে দুই পক্ষ স্ব-স্ব দেশের বিভিন্ন কার্যক্রম উপস্থাপন করে। এছাড়া, বাংলাদেশে বিদ্যমান ব্যবসায়ের পরিবেশ নিয়েও আলোচনা হয়।