মিডিয়া বলছে সম্রাট পিজিতে ছিল ২৪৪ দিন। পিজি কর্তৃপক্ষ বলছে ১৫ দিন। মিডিয়ার সূত্র জেল কর্তৃপক্ষ। পাবলিক মনে করছে এটা অংকের সমস্যা, সিস্টেমের নয়। ক্যাসিনো ঝামেলায় ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট।
ব্যাপার কি?
এই প্রসঙ্গে ‘আমাদের পত্রিকা’ বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলে মতামত নেয়।
সকল বিষয় সজ্ঞ বিশ্ষেজ্ঞকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘এতো চিন্তিত হবার কিছু নেই। তিনি খুবই নিরীহ প্রকৃতির ভালো মানুষ এবং দেশে অনেক বড় বড় রাজনৈতিক কাজ করেছেন। তিনি আসলে একটু রেস্টে ছিলেন, সম্ভবত বাসাতেই ছিলেন। আমার সাথে ফোনে কথা হয় তবে ঠিকানা দেননি কারণ আমি ধরে নিয়েছি তিনি জেলেই আছেন বা পিজিতে বা বাসা। তবে মিডিয়ার সব দোষ। ধন্যবাদ।’
বিদেশে থাকা এক পন্ডিত যিনি দেশের বিষয় গবেষণা করেছেন তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টার উত্তর জানা যাবে এডওয়ার্ড সাঈদের লেখায়, দেরিদার ভাবনায়। আমাদের বুঝতে হবে যে পশ্চিমা উদার পুঁজিবাদী সমাজের আদলে জেল ব্যবস্থা চলবে না। নতুন করে ফাঁনো ও ফুকোর আদলে জেল ব্যবস্থা দরকার।’
জনৈক রাজনীতিবিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে জানান, তিনি কোনোদিনই তাকে ‘সম্রাট’ ডাকবেন না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি সবার জন্য। আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সম্রাট এই দেশের রাজতন্ত্রপন্থী নাম। এই ধরণের নাম যেমন, সম্রাট, রাজা, বাদশা ইত্যাদি সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
নারীবাদী কর্মী সুলতানাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। তিনি এটাকে পুরুষতন্ত্রের একটি প্রকাশ বলে জানান। তার কথা হচ্ছে, ‘আমরা দেখলাম সকল আসামি পুরুষ এবং তাদের সবার বিভিন্ন হেলথ প্রব্লেম হচ্ছে। তারা পিজিতে যাচ্ছে এবং থাকছে অথচ আমরা কেউ শুনছি না নারী জেলবাসীদের কি হচ্ছে। তাদের অনেকেরই হৃৎপিণ্ড পুরুষতন্ত্রের নির্যাতনে ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু কই তারা তো পিজিতে নেই? আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি এর সমাধানের জন্য এবং যদি না হয় আমরা দেশের বিভিন্ন জেলের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি নেব।
কয়েদির কথা
করম আলী মিয়া একজন পেশাদার বাটপার। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে ঢাকা জেলে ছিলেন কয়েদি হিসেবে। তার বক্তব্য হচ্ছে, জেল বলে কিছু নাই, সবই মায়া। এটি একটি জানালার মতো। কখনো খোলা কখনো বন্ধ। প্রয়োজনে জেলের দরজা খুলবে, কিন্তু খরচ করতে হবে। ‘কোথাও কি লেখা আছে যে সব সময় জেলে থাকতে হবে? আমি জেলে যেতাম মাসে একবার, কয়েকদিন থেকে আমার বাড়িতে আসতাম। ব্যবসা বাণিজ্য ভালোই চলতো, একাধিক বিয়ে করেছি, বহু সন্তান আমার, এটা কি করে সম্ভব হলো। আসলে জেল একটি মনের ব্যাপার, ভাবলে আছে, ভাবলে নেই।’
সবার সাথে আলাপ করে বোঝা গেলো এই জেল ব্যবস্থা ব্রিটিশদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কিন্তু সেই কাল আর নেই। তাই জেল ব্যবস্থার সংস্কার চাই। আমাদের সাপ্তাহিক ও মাসিক জেলের সিস্টেম বানাতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ লোকদের দীর্ঘ দিন ভেতরে রাখা ঠিক হবে না। এতে দেশের ক্ষতি। তাছাড়া জেলে এসি, ফ্রিজ কিছুই নেই, এইভাবে জেল চলতে পারে না। পিজি আর কত লোড নেবে। আমরা আশা করবো যাতে সরকার পাঁচ তারা জেলের ব্যবস্থা করেন যাতে সবাই জেলে যেতে আগ্রহী হয়!
(লেখাটা কাল্পনিক)
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি