দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গত দুই বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি। রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে নতুন শিশু। এদের নাগরিকত্ব পরিচয় কি হবে? কোন দেশের পরিচয়ে এরা বেড়ে উঠবে? এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আবার নতুন খবর হলো- ভারতের আসামে নাগরিকত্বহীন করা হয়েছে ১৯ লাখের বেশি মানুষকে। শোনা যাচ্ছে যে এদের ঠেলে দেয়া হবে বাংলাদেশে। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য আরও একটি বড় বিপদের আশঙ্কা।’
এমন অবস্থায় দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশিদের এক কাতারে আসা এখন সময়ের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সর্বাগ্রে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন।’
‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, কেবল দ্বিপাক্ষিক ইস্যু বিবেচনা করলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান হবে না। এটি একপাক্ষিক কিংবা দ্বিপাক্ষিক নয়, এটি আন্তর্জাতিক ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে হলে আমাদের জাতীয়ভাবে নীতি নির্ধারণ করতে হবে। আর এ নীতি নির্ধারণের জন্য প্রয়োজন সর্বদলীয় বৈঠক,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার দেশের বিভিন্ন এলকায় তাদের দলের কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন রিজভী।
উল্লেখ্য, ৩১ আগস্ট ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে প্রকাশিত প্রকৃত নাগরিকদের তালিকায় চূড়ান্তভাবে ঠাঁই হয় ৩ কোটি ১১ লাখ মানুষের। বাদ পড়ে ১৯ লাখের বেশি। বেশিরভাগই বাংলাভাষী এসব মানুষকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে বাদ দেয়া হয়েছে। তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে ভারতের বাসিন্দা হওয়ার সপক্ষে প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
তালিকা প্রকাশের পর ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮ এর সাথে এক সাক্ষাতে আসামের অর্থমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, তারা বাংলাদেশকে বলবেন ‘তাদের লোকদের ফিরিয়ে নেয়া জন্য’। তার আগ পর্যন্ত বাদ পড়া লোকদের ভোট দিতে দেয়া হবে না এবং কিছু সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে।
অন্যদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং তিনি মনে করেন না যে যারা আসামের এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তারা বাংলাদেশি।