করোনা পরবর্তী জটিলতায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার হার্ট ও কিডনি আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, 'চিন্তার বিষয় এটা যে করোনা পরবর্তী জটিলতায় খালেদা জিয়ার হার্ট ও কিডনি আক্রান্ত হয়েছে, চিকিৎসকরা এই বিষয় নিয়ে চিন্তিত এবং তাকে কীভাবে সুস্থ করা যায় সে ব্যাপারে তারা কাজ করছে।'
জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল জানান, বৃহস্পতিবার তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমার এটা দেখে ভালো লেগেছে যে অনেক দিন পর উনার মুখে একটু হাসি দেখা গেছে।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক: বিএনপি
খালেদার চিকিৎসা বিষয়ে তিনি বলেন, তার অক্সিজেন সেচ্যুরেশন এখন বেশ ভালো, জ্বর এখন নেই এবং তার শ্বাসকষ্টও এখন নেই। কিন্তু যেটা একটু উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়, তার করোনা পরবর্তী যে জটিলতা, সেই জটিলতায় হার্ট ও কিডনি একটু আক্রান্ত।
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা তাকে বলেছেন হার্ট ও কিডনিসহ নানা জটিলতার কারণে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উন্নত হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি আছে এমন জায়গায় চিকিৎসা দরকার।
বিএনপি নেতা বলেন, 'এজন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্য যে সরকার অনুমতি দেয়নি।'
হাসপাতালের চিকিৎসক এবং খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘তারা নিয়মিতভাবে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র এবং লন্ডনের চিকিত্সকদের সাথে পরামর্শ করে তাকে আরও ভালো চিকিত্সা দেয়ার চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মধ্যে ফিরে আসবেন এবং দেশের কল্যাণে কাজ করবেন।।
৭৬ বছর বয়সী বিএনপি নেত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভর্তির একদিন পর ২৮ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
পরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভের ফল আসে। তিনি ছাড়াও তার বাসার আট সদস্য করোনায় আক্রান্ত। ২৪ এপ্রিল খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফা করোনা পরীক্ষাতেও ফলাফল পজিটিভ আসে।
২৭ দিন করোনা আক্রান্ত থাকার পর ৮ মে খালেদার করোনা নেগেটিভ আসে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার অনুমতি চেয়ে তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু সরকার সেই আবেদনে অনুমতি দেয়নি।
দুর্নীতির মামলায় ২৫ মাস কারাভোগের পর করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নির্বাহী আদেশে ছয় মাস দণ্ড স্থগিত হওয়ায় গত বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পান সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।