নিহত বেগ আনিসুর রহমান (৫২) খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বেগ লিয়াকত আলীর ছোট ভাই।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার জানান, পাট বোঝাই ট্রাক (যশোর ট-১১-০৯১৪) বেজেরডাঙ্গা আয়ান জুট মিল থেকে রেলিগেট বিশ্বাস জুট ট্রেডার্সে যাচ্ছিল। ট্রাকটি রাত সোয়া ৮টার দিকে ফুলবাড়ীগেট জামিয়া কারিমিয়া মাদরাসা সংলগ্ন জাব্দিপুর বালুরমাঠ এলাকায় আসলে খুলনাগামী মাহেন্দ্র (খুলনা মেট্রো থ-১১-০৮৩৭) ওভারটেক করার সময় ট্রাক ও মাহেন্দ্রর মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে মাহেন্দ্রর সামনে থাকা বেগ আনিসুর রহমান ছিটকে পড়ে ট্রাকের পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
ওসি আরও জানান, খবর পেয়ে খানজাহান আলী থানা পুলিশ ও দৌলতপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল রাত পৌনে ৯টায় নিহতের লাশ উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ ট্রাক ও মাহেন্দ্র আটক করেছে।
দেশের সড়ক দুর্ঘটনা পরিস্থিতি
দেশের সড়ক ও মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা গত নভেম্বরে কিছুটা বেড়েছে। মাসজুড়ে সংঘটিত ৪১৭ দুর্ঘটনায় ৪৩৯ জন নিহত এবং ৬৮২ জন আহত হয়েছেন।
নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নামে এক সংস্থার ৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
সংস্থাটির তথ্যমতে, গত অক্টোবর মাসে ৩১৪ দুর্ঘটনায় ৩৮৩ জন নিহত হন।
আরও পড়ুন: পৌর নির্বাচন: সিরাজগঞ্জে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী নিহত
জমি নিয়ে বিরোধ: পাবনা, খুলনা ও ভোলায় নিহত ৪
বিএসএফের ছোড়া রাবার বুলেটে লালমনিরহাটে বাংলাদেশি যুবক নিহত
গত নভেম্বর মাসে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। এ ধরনের ১২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪১ জন। যা মোট নিহতের ৩২.১১ শতাংশ। আর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা মোট ঘটনার ৩০.৬৯ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দেয়া তথ্যমতে, দুর্ঘটনায় ১১৬ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৬.৪২ শতাংশ। আর যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৪৯ জন, যা মোট নিহতের ১১.১৬ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। রাজধানীতে ১১১ দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২২ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪ জন।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে ১০ বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলো হলো- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি।
সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।