রবিবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপির কথা হলো জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত নন। আর আমরা বলছি, তিনি যে বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত আমাদের কাছে সে প্রমাণ আছে। আমরা প্রমাণ ইনশাল্লাহ যথাসময়ে জাতির সামনে পেশ করব। ওয়েট অ্যান্ড সি।’
জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে পাওয়া খেতাব বাতিলের প্রস্তাব না সিদ্ধান্ত কোনটি হয়েছে তা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাব, এইটা আপনারাই দেখছেন। আমরা তো প্রস্তাবের মালিক, আমরা প্রস্তাব করেছি। আমরা বলছি, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জড়িত। তাকে খুনি হিসেবে আমরা সেটা বলেছি।’
আরও পড়ুন: রাজধানীতে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ
আল জাজিরার প্রতিবেদনে সরকার বিচলিত: বিএনপি
মুক্ত করতে ব্যর্থ হওয়ায় খালেদার কাছে ক্ষমা চাইলেন বিএনপি নেতারা
মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেয়া হয়।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সম্প্রতি এক বৈঠকে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং বঙ্গবন্ধুর স্বঘোষিত খুনিদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বীর উত্তম বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সভায় বঙ্গবন্ধুর চার দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি নূর চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, মোসলেহ উদ্দিন এবং রাশেদ চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ শুক্রবার বলেছিলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আসলে কী ছিল সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে তিনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার খেতাব বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তো হয়নি এখনো। এটা নিয়ে জামুকাতে আলোচনা হয়েছে মাত্র।’
আরও পড়ুন: বিএনপির কোনো অপকর্ম বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না: কাদের
খালেদার কারাবন্দী জীবনের তিন বছর: প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে: প্রধানমন্ত্রী
এদিকে, জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিল করার প্রস্তাবের প্রতিবাদে রাজধানীতে শনিবার সমাবেশ করেছে বিএনপি। সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া এই সমাবেশে বিএনপির কয়েক শতাধিক নেতা-কর্মী যোগ দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তৃতার মধ্য দিয়ে সমাবেশ শেষ হলে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের যানবাহন চলাচল করার জন্য অবিলম্বে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা খালি করতে বলে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে কয়েকজন নেতা-কর্মীর বাগবিতণ্ডা হয়। বিএনপি নেতা-কর্মীরা কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পুলিশের সদস্যরা তাদের ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে বিএনপির একদল নেতা-কর্মী প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে পড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পুলিশের লাঠিপেটায় এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হন।
সংঘর্ষের সময় খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমানউল্লাহ আমান ও নাজিমউদ্দিন আলমসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা জাতীয় প্রেসক্লাবে আশ্রয় নেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দুপুর ১২টা ৫০ এর দিকে তারা প্রেসক্লাব ত্যাগ করেন।