নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা দেয়ার ঘটনায় অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতাকে অব্যাহতি দেয় হয়েছে। এছাড়া আগামী তিন দিনের মধ্যে তাকে লিখিত জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট অচিন চক্রবর্ত্তী এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়।
অভিযুক্ত আকতার হোসেন টিংকু একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
আরও পড়ুন: মুরাদকে জেলা আ’লীগ থেকে অব্যাহতি
চিঠিতে বলা হয়, আপনাকে (আকতার হোসেন) কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া যাচ্ছে যে, গত ১৮ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের এক ছাত্রের মোবাইলে (ফেসবুক) স্ট্যাটাস নিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আপনি উক্ত কলেজের একজন শিক্ষক। আপনার উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে বের করে আনা হয়। যা নিন্দনীয়, শিক্ষক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করার সামিল। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবরে আপনাকে জড়িত করে সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। সে কারণে আমরা মনে করি আপনি, সভাপতি হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
উপরোক্ত কারণে আপনাকে এই পত্র পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে লিখিত কারণ দর্শাতে বলা গেল। আজ (৩০ জুন) থেকে ইউয়িন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া গেল।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে লেখেন-প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম। এ পোস্ট দেয়ার পর গত ১৮ জুন সকালে কলেজে আসলে তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললে রাহুল তা করেনি।
আরও পড়ুন: যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ব্যারিস্টার সুমনকে অব্যাহতি
শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোঁড়ে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ এনে বিক্ষুদ্ধ জনতা ১৮ জুন বিকালে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতার মালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আকতার হোসেন টিংকু বলেন, ঘটনার দিন আমি সব সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। উদ্দেশ্যমূলক আমাকে দায়ী করা হচ্ছে।