বিএনপি গত ১৩ বছরে ২৬ বার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এখন বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনলে মানুষ হাসে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, গত ১৩ বছরে বিএনপি ২৬বার আন্দোলনের ডাক দিয়ে পারলো না, পারবে কোন বছর? তাদের আন্দোলনে সবার প্রশ্ন, এই বছর না ওই বছর আন্দোলন হবে কোন বছর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে নেতাকর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আগামী জুনের মধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ পিছানো হয়নি। আগামী জুনেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এলাকার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি। অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর, আইসিইউ প্রতিস্থাপন, খাদ্য সামগ্রী এবং ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছি। বহুদিন মা বাবার কবর জিয়ারত করতে পারিনি তাই মনটা বিষন্ন ছিল। যারা আমার ভোটার, তাদের মাঝে আসতে পেরে ভাল লাগছে। নিজের বাড়িতে এসেছি, নিজের খাবার খেয়েছি, নামাজ পড়েছি। আমার আজকে অনেক ভাল লেগেছে।
আরও পড়ুন: প্রায় ৩ বছর পর নির্বাচনী এলাকায় ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদেরকে বীর ৭১ সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
এর আগে, তিনি নিজ বাড়ির দরজায় পুলিশের গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তাঁর হাতে বীর ৭১ সম্মাননা পদক তুলে দেন তাঁর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। পরে, বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেন।
এদিকে, বিকাল ৩টায় কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে উপজেলা ডাক বাংলায় ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ওবায়দুল কাদের।
এসময় জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক খায়রুল আনম সেলিম, যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, নোয়াখালী পৌর মেয়র শহিদ উল্ল্যাহ খান সোহেল, ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জাসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৩ আগস্টের পর দীর্ঘ প্রায় ৩৩ মাস পর নিজ নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জে আসেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত এক বছর নানা ঘটনায় সমালোচনায় পড়তে হয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের। আলোচনার সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তাঁর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠছে সংগঠনের ভেতর থেকেই। বড় ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও ভাবীর বিরুদ্ধে বিষেদগার করেন কাদের মির্জা। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বার বার সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। এতে স্থানীয়ভাবে নাজুক অবস্থায় পড়েছে সংগঠন। স্থানীয় রাজনীতিতে কাদের মির্জা বিরোধী অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল। তাঁর খুঁটি হচ্ছে কাদের মির্জার আপন তিন ভাগ্নে। বাদল ও ভাগ্নেদের বিরুদ্ধেও কাদের মির্জা নানা অভিযোগ তুলেন। একপর্যায়ে দুই গ্রুপের এ দ্বন্দ্ব সংঘাতে কাদের মির্জার প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় তারই আপন তিন ভাগ্নে। সেই বিরোধের জের ধরে গত কয়েক মাসে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে একজন সাংবাদিকসহ দুই জন নিহত হয়। আহত হয় প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী। পাল্টাপাল্টি ৭২টি মামলা হয়। এতে আসামি হয় উভয় পক্ষের প্রায় সাত হাজার তৃণমূলের নেতাকর্মী। এখনও বাড়ি ছাড়া রয়েছে হাজারো নেতাকর্মী।