বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ‘পুনরুদ্ধার’-এর চলমান আন্দোলন কোনও বাধার মুখে বন্ধ করবে না তার দল।
শুক্রবার ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদর সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সুশৃঙ্খল ও গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই সভা-সমাবেশ করার অধিকার। আমরা কোনও বাধার কাছে হার মানবো না এবং দেশের জনগণও মানবে না।’
এর আগে বিএনপির এই নেতা বুধবার তার স্থানীয় বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, চট্টগ্রামের জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সর্বস্তরে তাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দশটি বিভাগীয় সমাবেশের প্রথমটিতে ব্যাপকভাবে যোগ দিয়ে দেখিয়েছেন কীভাবে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়।
তিনি বলেন, শনিবার ময়মনসিংহে তাদের দলের ঘোষণা অনুযায়ী দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ করার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে একই দিনে সমাবেশ ডেকেছে। এটি স্থানীয় প্রশাসনকে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করতে পারে। সমাবেশের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে যে কাউকে সমাবেশ করতে বাধা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম, সে অনুযায়ী কর্মসূচির প্রচারণা চলছে। ফলে একই দিনে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ডাকার কোনও কারণ নেই। এতে প্রতীয়মান হয়েছে যে তারা(আ.লীগ) গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়, কারণ তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। ‘তারা এখন দেশকে দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত করছে। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এ আন্দোলন চলবে। কোনও বাধাই আমাদের থামাতে পারবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, তারা জনগণের স্বার্থে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে তাদের দ্বিতীয় ধাপের আন্দোলন শুরু করেছে: ‘তবে সমাবেশে যাওয়ার পথে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান আন্দোলনে তাদের পাঁচ নেতা নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহিংসতার ঘটনায় বিরোধী দলের প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
তিনি বলেন, দেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) একা দায়ী নয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারও দায়ী। ‘সুতরাং, সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন। দেশের জনগণ ইতোমধ্যে তাদের(সরকার) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, তাদের দল আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না এবং দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনও নির্বাচন হবে না।
বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে ইঙ্গিত নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও এখন বলছেন যে বাংলাদেশ একটি স্বৈরাচারী শাসনের কবলে রয়েছে, উল্লেখ করেন ফখরুল। ‘এটি এখন একটি সত্য এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে বাংলাদেশ একটি স্বৈরশাসকের অধীনে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল