তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিলেন। আজ তারই উত্তরসূরীরা স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলছে। ভাস্কর্যবিরোধীরা অসাম্প্রদায়িকতা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর আঘাত হেনেছে।’
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা ও অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধ অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
নতুন প্রজন্ম ও নারীদের মৌলবাদ এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাড়াঁনোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ যারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলে, ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে তাদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও। তাদের আস্তানা ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তাদের বিতাড়িত করে দাও। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তেভেজা এই মাটিতে মৌলবাদীদের জায়গা হবে না। তাদের জায়গা হবে ওই পাকিস্তানে।’
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের চরম মূল্য দিতে হবে: আ’ লীগ
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক জ্যোতি লাল কুরী।
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। এখন বাংলাদেশের ঝুড়ি খাদ্যে পরিপূর্ণ। এখন কিন্তু কেউ আর খালি গায়ে, খালি পায়ে, খালি পেটে থাকে না। মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে।’
শিশুদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয় এক দিনে আসেনি। বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীনতা অর্জনের দিকে চালিত করেন। সুদীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়।
ভাস্কর্য নিয়ে বিরাজমান পরিস্থিতিকে চক্রান্ত বললেন চরমোনাই পীর
আলোচনা সভায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পারভীন আকতার, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন ও ড. মহিউদ্দীন আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক:
রাজধানীতে জাতির পিতার একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের সৃষ্টি হয়। দেশে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন কয়েকটি ইসলামিক রাজনৈতিক দলের নেতা। এমন পরিস্থিতির মাঝে গত ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে রাতের আঁধারে জাতির পিতার নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। তার আগে ২ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্যের একটি অংশ কে বা কারা ভেঙে ফেলে।
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর
এদিকে, জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙা ও অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সাথে ভাস্কর্য, ম্যুরাল, প্রতিকৃতি ও স্ট্যাচুর পক্ষে সচেতনতা গড়তে ইসলামি ফাউন্ডেশন ও ইসলামি খতিবকে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালাতে বলেছে আদালত।
বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৮ ডিসেম্বর এক রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেয়।
ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা