ফেনীতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করায় ফেসবুকে লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন সোনাগাজী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শাহজাহান। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক।
সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলী এলাকায় নিজ বাড়িতে বুধবার সন্ধ্যায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
আত্মহত্যা চেষ্টার আগে শাহজাহান salman sayed নামে ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে জানান, তার মাকে জিম্মি করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। নিজেকে রক্ষা করার জন্য কারো সহযোগিতা না পেয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তার মৃত্যুর জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন, চরচান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আজিজুল হক হিরন, মেয়র খোকনের ভাই মিজান দায়ী থাকবে। ফেসবুক লাইভ শেষে শাহজাহান ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।
আরও পড়ুন: চসিক নির্বাচন: আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত ১
প্রার্থী শাহ জাহানের অভিযোগ, নিজ দলের আরও কয়েকজন নেতা জোর করে তাকে কাউন্সিলর পদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছেন।
ফেসবুক লাইভে এসে শাহ জাহান প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি বলেছেন, পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে গুরুত্ব দিতে। আপনার কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমি সোনাগাজী পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করি। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতা আমাকে সকাল থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে চাপ দিতে থাকেন। আমি তাদের চাপে পড়ে আত্মগোপনে চলে যাই। বিকালে তারা আমার বাড়ি গিয়ে আমার বৃদ্ধ মাকে চাপ প্রয়োগ শুরু করেন। খবর পেয়ে বাড়িতে গেলে তারা আমাকে জোর করে ধরে নির্বাচন কার্যালয়ে নিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে। আর যারা জোর করে আমাকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছেন, আমার মৃত্যুর জন্য তারাই দায়ী থাকবেন।’
শাহ জাহানের স্বজনেরা জানান, পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন বুধবার শাহ জাহানসহ সোনাগাজীতে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে দুজন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৯ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
তারা জানান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করায় সন্ধ্যায় তিনি ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে দরজা খুলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: উন্নয়ন মানেই আওয়ামী লীগ: নানক
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. সাদেকুল করিম বলেন, ঘুমের ওষুধ জাতীয় বিষপানে অসুস্থ অবস্থায় শাহ জাহান নামে একজনকে হাসপাতালে আনা হয়। দ্রুত তার পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, একাধিক প্রার্থীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাত থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার আগ পর্যন্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি ও চাপ প্রয়োগ করেন।