অপর তিন নেতা হলেন- দলের সাবেক নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক।
দলটির সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া রবিবার ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা গত ২৮ সেপ্টেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনকারী চার নেতার কাছে কারণ দর্শনের নোটিশ পাঠিয়েছি।’
নোটিশে ওই চার নেতা দলীয় গঠনতন্ত্রের বিভিন্ন ধারা যে তারা লঙ্ঘন করেছেন তা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রেজা কিবরিয়া বলেন, নোটিশের জবাবের জন্য দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করা হবে। এর মধ্যে যদি তারা কোনো সন্তোষজনক জবাব না দেন তবে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তাদের দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি আগামী ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সভা করতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই সভায় চার নেতার বিরুদ্ধে নেয়া ব্যবস্থার অনুমোদন দেয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে মোস্তফা মহসিন মন্টু জানান, এ জাতীয় কোনো নোটিশ তারা এখনও পাননি। ‘নোটিশ পেলে আমরা এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।’
তবে তারা কোনো দলীয় শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্রের কোনো ধারা লঙ্ঘন করেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘বরং তারা (ড. কামাল ও রেজা কিবরিয়া) ধারাবাহিকভাবে দলের গঠনতন্ত্রের লঙ্ঘন করছে। তারা গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিয়েছে এবং আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে। দলের গঠনতন্ত্রের অনুযায়ী এখন গণফোরামে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই।’
মন্টু বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিল ও কেন্দ্রীয় কমিটির সভাতেই আহ্বায়ক কমিটি করার জন্য কেবল দল বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘গত ২৬ সেপ্টেম্বর তারা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা করেছেন, সেখানে ২৬ ডিসেম্বর গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরাই দলের গঠনতন্ত্র অনুসরণ করছি যেখানে রেজা কিবরিয়া ও অন্যরা তা লঙ্ঘন করছে।’
এদিকে, ড. কামাল ও রেজা কিবরিয়ার অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার হওয়া কিছু নেতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ ও বিবৃতি দিচ্ছে।
যে কোনো ব্যক্তি গণফোরামের রাজনীতি ত্যাগ করে নতুন রাজনীতি করতে পারেন। কিন্তু গণফোরামের নামে অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দলকে বিব্রত করার এখতিয়ার কারো নেই, যোগ করেন তারা।
দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিবাধের জেরে গত ৪ মার্চ গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল কেন্দ্রীয় কমিটির বিলুপ্তি ঘোষণা করেন এবং ১২ মার্চ ৭০ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন।
গত বছরের ২৬ এপ্রিল দলের পঞ্চম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে দলীয় নেতাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ওই কাউন্সিলে দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ অনেক দলীয় শীর্ষ নেতাদের বাদ দিয়ে ওই কমিটির গঠন করা হয়।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি আবু সাইয়িদ এবং সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্ধিত সভা করে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনের ঘোষণা দেন।
তারা রেজা কিবরিয়াসহ আরও তিন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারেরও ঘোষণা দেন।
তবে ড. কামাল অবশ্য জানিয়েছেন গণফোরামের নিয়ম অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ সভার আহ্বান না করায় ওই সভার বৈধতা নেই।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে গিয়ে ১৯৯৩ সালে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।