পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক আর প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টা চালায়, সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক। এটি যেন, চোরের মায়ের বড় গলা।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও অপর নেতা ড. আবদুল মঈন খানের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছিল, ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছিল, ড. মঈন খান আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য সন্নিবেশিত হয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দৈত্যের দল বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. হাছান বলেন, ‘শুধু বিএনপির জন্মই অগণতান্ত্রিক নয়, তারা দেশে সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তাদের হাত ছিল। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই সেটি ঘটানো হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং জঘন্য মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা তারা চালিয়েছিল।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৫০০ নির্বাচনি কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং নির্বাচনি কর্মকর্তা ও বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেটির উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা ছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের বিগত নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হয়।’
এ সময় সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে আটক জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলদস্যুদের হাত থেকে নাবিক এবং জাহাজ দুটোই উদ্ধার করার ক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, আশা করছি শিগগিরই তাদের মুক্ত করতে পারব। তবে উদ্ধারের দিনক্ষণ বলাটা কঠিন।
আরও পড়ুন: নাবিকদের উদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. হাছান আরও বলেন, ‘আমরা নাবিকদের পরিবারদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে। নাবিকরা ভালো আছে, নিয়মিতভাবে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, এমনকি ভিডিও কলেও কথা বলছে। আমরা আশা করছি তাদের শিগগির মুক্ত করতে পারব।’
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা এবং তাদের হামলায় এদিন এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত মন্ত্রিসভার মিটিংয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে কিশোর গ্যাং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এটি নতুন সমস্যা, এটিকে দূরীভূত করতে সরকার কাজ করছে এবং কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে ও নেপথ্যে যেই থাকুক, সে যেই দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও হচ্ছে।’