ভুল নীতির কারণে সরকার লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন।
সোমবার লোডশেডিং নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিএনপি চেয়ার পার্সনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো বিদ্যুৎ প্রকল্প নেয়ার আগে এর স্থায়িত্ব মূল্যায়ন করতে হয়। কিন্তু সরকার ক্ষতির মূল্যায়ন না করেই জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে কী পরিণতি হবে তা তারা বিবেচনা করেনি।’
তা না করার ফলে মানুষ এখন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হবেন বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটি কেবল একটি ব্যয়বহুল লোডশেডিং হয়ে উঠেছে।’
টুকু বলেন, ‘সরকার জনগণের টাকা লুটপাটের ‘অশুভ’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভাড়ায়চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। যেকোনো দুর্নীতিবাজ এবং ফ্যাসিবাদী শাসন এমন কাজ করে।’
লোডশেডিং নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে সহায়ক হবে কি না জানতে চাইলে টুকু বলেন, ‘বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তারা আমদানি ব্যয় কমাতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। মজুদের ঘাটতির কারণে জ্বালানি ও গ্যাস আমদানি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সাশ্রয়: মঙ্গলবার থেকে দেশে দৈনিক এক ঘণ্টা লোডশেডিং
তিনি বলেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত মজুদ নিয়ে বড়াই করে আসছে। ‘কোথায় গেল সেই রিজার্ভ, হঠাৎ হারিয়ে গেল কেন? সরকার একটি প্রচারণাও চালায় যে আমরা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশকে ছাড়িয়ে গেছি। কিন্তু দেশ এখন অর্থনৈতিক সংকটে। এর জন্য আমি সরকারকে দায়ী করব।’
বিএনপি নেতা বলেন, অতীতে জনগণকে লোডশেডিংয়ের জন্য টাকা দিতে হতো না। কিন্তু জনগণকে এখন লোডশেডিংয়ের জন্য টাকা দিতে হচ্ছে। এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।’
এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার তড়িঘড়ি করে বেসরকারি খাতকে সব সেরা পরিকল্পনা দিয়েছে এবং রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টগুলিকে সেরা সমাধান হিসাবে নিয়ে এসেছে। আমি মনে করি এগুলো ছিল খারাপ এবং বিপথগামী পরিকল্পনা ‘
বিদ্যুৎ উৎপাদন সরকারের হাতে রাখার পরামর্শ দিয়ে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে এখন ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হতো না। কিন্তু সরকার এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করছে।’
আরও পড়ুন: কাল থেকে এলাকাভিত্তিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিং