সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, তাদের চলমান আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত, কারণ সরকার দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমন করতে পারবে না।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তাদের এখন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমাদের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ সবাইকে শুধু রাজপথে নামার জন্য কারাগারে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারির তফসিল বাতিলের দাবি বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) শ্রমিকদের সমাবেশে কাল্পনিক মামলা দায়ের এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের পাইকারি গ্রেপ্তার বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মুক্তি দিতে এবং আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বলপ্রয়োগ ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে আন্দোলন দমন করা যাবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের কোনো স্বৈরাচারী সরকার দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণের মন জয় করতে পারে না। এই সরকারও তা করতে পারবে না। আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্রের জন্য এবং জনগণের ভোটাধিকারের জন্য। আমরা অবশ্যই এই লড়াইয়ে জয়ী হব।’
গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচার, আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ।
গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিকদের মুক্তি, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল এবং পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার জন্য সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যেও এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মান্না বলেন, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলন বন্ধ করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি মানুষ ভোট দিতে যাবে না। কিন্তু তারা (সরকার) নাটকের মতো মঞ্চে অনেক কেন্দ্র প্রস্তুত করবে। পরে সন্ধ্যায় তারা ঘোষণা করার চেষ্টা করবে যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এমন জল্পনা-কল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, জাতীয় নির্বাচনের নামে কীভাবে নাটক করা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সরকার এ ধরনের গুরুতর বিষয় নিয়ে ভাবছে না।
তিনি দাবি আদায়ের পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, সরকার জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের মতামত উপেক্ষা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখলের ‘প্রহসনের’ নির্বাচন করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শ্রম অধিকার নিয়ে একটি নতুন নীতি ঘোষণা করেছে।’
তারা বলেন, ‘এ ধরনের একতরফা নির্বাচন হলে এবং শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তারা আমাদের পোশাক খাতের উপর নতুন বিধিনিষেধ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।’
সাকি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ছাড়াই শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে যাচ্ছে। সরকারের এই প্রচেষ্টা কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না।’
একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানেসরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তিনি শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: শাহজাহান ওমরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ঝালকাঠি জেলা বিএনপি
৭ জানুয়ারি নির্বাচন: তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি