বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি’র মতো বিশ্বে খুব কমই রাজনৈতিক দল আছে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এতো নির্যাতন সহ্য করেছে। আমাদের ২৬ লাখেরও বেশি নেতা-কর্মীর নামে এক লাখেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০০-এর বেশি গুমসহ শতাধিককে নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ যদি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করত তাহলে দেশে বিএনপির কোনো অস্তিত্ব থাকত না বলে গতকাল (বুধবার) সংসদে করা প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্য দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) এই মন্তব্যের মাধ্যমে আসলে বুঝাতে চেয়েছেন তারা বিরোধীদল নির্মূলে কাজ করছেন। তারা পরিকল্পিতভাবে শুধুমাত্র বিএনপি নয় সকল বিরোধীদল এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্মূলের চেষ্টা করছেন।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শরিক দলের সাথে এক যৌথ মিটিং শেষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গত বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হত্যার ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। যদি আমরা তা করতাম তাহলে এ দেশে বিএনপির অস্তিত্ব থাকত না। কারণ, আমাদের চেয়ে কেউ বেশি বিএনপির হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়নি।’
ফখরুল দাবি করেন, বিএনপির চেয়ারপারর্সন খালেদা জিয়া রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। কেননা তিনি জামিন পাওয়ার যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না।
‘বর্তমান সরকার রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত এবং তারা সংবিধান লঙ্ঘন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে,’ বলে দাবি করেন তিনি।
রাজনৈতিক কারণে আইন সবার জন্য সমান এ কথাও এখন মানা হচ্ছে না বলে দুঃখ প্রকাশ করেন বিএনপির এ নেতা।
তিনি বলেন, অন্যান্য আসামিরা বিভিন্ন মামলায় জামিন পেলেও বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না।
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, এখন আইনমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া নিম্ন আদালতও স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাবা-ছেলে আলাদা আলাদা দলের রাজনীতি করতেই পারে। সেসব দেশে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে, ছেলেকে বাবার অনুসরনীয় রাজনীতিই করতে হবে।
পরিতাপ করে ফখরুল বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে এখন বিকল্প মত প্রকাশেরও সুযোগ নেই। দেশ ও সমাজে মারাত্মক মেরুকরণ হয়ে গেছে। মানুষ এখন খারাপ পরিস্থিতি শিকার হওয়ার ভয়ে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাড়ি পর্যন্তও যেতে চায় না।’