সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে সরকারের কাছে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে এবং এর জন্য যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করার জন্য অবিলম্বে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত।’
সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এসব কথা বলেন।
অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।
একই সঙ্গে দেশের সব কন্টেইনার ডিপোতে ‘নজরদারি ব্যবস্থা’ চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।
পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ৪১: প্রশাসন
সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার জনগণের কল্যাণে কিছু করে না, তাদের নিরাপত্তার কথাও ভাবে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ‘তথাকথিত অবকাঠামো নির্মাণের নামে নিজেদের পকেট ভারি করা এবং দুর্নীতি করা।’
চট্টগ্রাম অগ্নিকাণ্ডের পর দেশের পোশাক খাত ও অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ‘অবশ্যই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
তাজরীন কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের পর দেশের পোশাক খাতের অবস্থা ভালো ছিল না। ক্রেতা ও পোশাক উৎপাদনকারী ও মালিকদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিতই থেকে গেছে বলে জানান তিনি।
এর জন্য সরকারকে দায়ী করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের উচিত ‘জাতীয় শোক দিবস’ ঘোষণা করা।
আওয়ামী লীগ এখন লুটপাট, দুর্নীতি ও অর্থপাচারে লিপ্ত। তারা শুধু জনগণের আশা নষ্ট করছে, পদ্মা সেতু ছাড়া আর কিছুই নেই।
এদিকে, সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে ভয়াবহ আগুন ও কন্টেইনার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ৫০ নয় ৪১ বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা থাকায় মারা যাওয়া ব্যাক্তিদের একজনকে একাধিকবার গণনায় আনার ফলে ভুল হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘একই মরদেহ দুবার কাউন্ট হয়েছে। পরে সবগুলো মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসার পর প্রকৃত সংখ্যা ৪১ জন পাওয়া গেছে। গণনার ভুলে লাশের সংখ্যা বেড়ে গেছে। মূলত এখন পর্যন্ত ৪১টি মরদেহ পাওয়া গেছে।’
পড়ুন: পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ ম্লান করতে নাশকতা কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী