‘শ্রাবণের ধারার মতো পড়ুক ঝরে, পড়ুক ঝরে’, - গানের পংক্তির মতোই কোনও এক শ্রাবণের দিনে এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ ২২ শে শ্রাবণ (শুক্রবার) বিশ্বকবি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম মৃত্যুবার্ষিকী।
পৃথিবী যখন সুস্থ ছিল, স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির প্রায় এক শতাব্দী পর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি আসার আগে, প্রতি বছর বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যথাযথ মর্যাদার সাথে দিবসটি পালন করার জন্য বিশাল কর্মসূচি গ্রহণ করার প্রচলন ছিল। কিন্তু গত বছরের ন্যায় এবছরও করোনার প্রকোপ এবং দেশে লকডাউন চলায় সীমিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হচ্ছে দেশে ও দেশের বাইরে।
জনসমাগম এড়াতে স্বল্প পরিসরে এবার দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভার্চুয়াল কর্মসূচির মাধ্যমে কবির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন ও কবি ভক্তরা দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানে বাঙালির প্রাণের কবিকে স্মরণ করছে।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সারদা দেবীর ১৩ সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে বাংলা ১২৬৮ সালের ২৫ বৈশাখে (৭ মে, ১৮৬১) জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি প্রায় দুই হাজারেরও বেশি সংগীত রচনা করেছেন যা দুই বাংলায় ‘রবীন্দ্র সংগীত’ হিসেবে পরিচিত। সেই সাথে তিনি প্রায় সাত দশক ধরে তার দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে আটটি উপন্যাস, ৮৮টি ছোট গল্প এবং অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। তার রচিত ‘আমার সোনার বাংলা’ ও ‘জন গণ মন’ গান দু’টি যথাক্রমে বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত। এছাড়া অনেক ইতিহাসবিদের মতে শ্রীলঙ্কার জাতীয় সংগীতের রচয়িতা এবং সুরকার এই মহান কবি।
সংস্কৃতি ও সাহিত্যের চর্চা ছড়িয়ে দিতে এবং ভবিষ্যতের শিল্পী ও সাহিত্যিক তৈরি করতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম বাঙালি এবং অ-ইউরোপীয় কবি হিসেবে ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।