প্রাচীন সমাধি ও স্মৃতিস্তম্ভের সঙ্গে ব্যস্ত সমস্ত লোকারণ্যকে বুকে ধারণ করে দীর্ঘকাল ধরে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে আসছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।
দেবনগরী নামে খ্যাত এই ঐতিহাসিক শহর বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগর। বেশ কয়েকটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটসহ দিল্লি এখন শৈল্পিক ও প্রযুক্তিগত দর্শনীয় স্থানেরও প্রাণকেন্দ্র। ফলশ্রুতিতে, পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানান ধরণের পর্যটক তাদের স্বজাতির চিহ্নগুলো খুঁজে পান এখানে। এমনি হাজার সংস্কৃতির মিলনকেন্দ্র এবার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩-এর আয়োজনে।
তাই দিল্লি দর্শনের মাধ্যমে ক্রিকেট উৎসাহীরা তাদের খেলা দেখার আনন্দকে বাড়িয়ে নিতে পারেন বহুগুনে। চলুন, এই উপলক্ষে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক দিল্লি ভ্রমণের আদ্যোপান্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে
দিল্লির ১০টি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান
ইন্ডিয়া গেট
নয়া দিল্লির রাজপথের পাশে অবস্থিত এই স্থাপনাটির আরও একটি নাম অল ইন্ডিয়া ওয়ার মেমোরিয়াল। ১৩৮ ফুট উচু ঐতিহাসিক কাঠামোটি নকশা করেছিলেন ব্রিটিশ স্থাপত্যশিল্পী স্যার এডউইন লুটিয়েন্স। শহরের এই যুদ্ধের স্মারকটিকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়।
এটি উৎসর্গ করা হয়েছে মুলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং তৃতীয় অ্যাংলো-আফগান যুদ্ধের সময় মারা যাওয়া ৮৪ হাজার ভারতীয় এবং ব্রিটিশ সৈন্যদের প্রতি। স্মৃতিস্তম্ভটির পৃষ্ঠে খোদায় করা আছে ১৩ হাজার ৩০০ জন সৈনিকের নাম।
পিকনিকে আসা দলগুলোকে কেন্দ্র করে প্রায়ই এখানে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের ফেরিওয়ালারা ভীড় করে। খুব কাছাকাছিই আছে একটি মনোরম শিশু পার্ক।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম
পূর্বে ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়াম নামে পরিচিত এই ক্রিকেট ভেন্যুর প্রতিষ্ঠাকাল ১৮৮৩ সাল। নয়াদিল্লির বাহাদুর শাহ জাফর মার্গে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে এবার ক্রিকেট বিশ্বকাপের পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৬ নভেম্বরের ম্যাচটিতে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার।
মাঠটি দিল্লির সেরা কিছু দর্শনীয় স্থানের কাছাকাছি হওয়ায় দিল্লি ভ্রমণটা ষোলো আনা পুষিয়ে নেয়া যেতে পারে। লাল কেল্লা, পুরান কেল্লা, ফিরোজ শাহ কোটলা এবং চাদনী চক এক নিমেষেই নিয়ে যাবে প্রাচীন ভারতে। দিল্লি চিড়িয়াখানা থেকে নেয়া যেতে পারে বিস্ময়কর সাদা বাঘের দর্শন।
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
সম্রাট হুমায়ুনের সমাধি
সমাধিটি ১৫৫৮ সালে তৈরি করেছিলেন হুমায়ুনের প্রথম স্ত্রী মুঘল সম্রাজ্ঞী বেগা বেগম। এর নকশা করেছিলেন পারস্য স্থপতি মিরক মির্জা গিয়াস এবং তাঁর পুত্র সাইয়্যিদ মুহাম্মদ।
পূর্ব নিজামুদ্দিন রোডে অবস্থিত এই সমাধি পুরো একটি সমাধি কমপ্লেক্সের অংশ, যেখানে শায়িত আছেন আরো অনেক মুঘল শাসক। এই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটি ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম উদ্যান-সমাধি। এটিই ছিল প্রথম স্থাপনা, যেখানে বৃহৎ পরিসরে লাল বেলেপাথর ব্যবহার করা হয়েছিল।
এর পারস্য ঘরানার চারবাগ বাগান পরবর্তী মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে এক দীর্ঘ মাইলফলক স্থাপন করেছিল, যা ভারতে এর আগে কখনও দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ