ভ্রমণ গাইড
ভিয়েতনাম ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ভ্রমণ নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতা থেকে দিতে পারে স্বস্তি ও মুক্তি। এশিয়ার মধ্যে আছে এমন কিছু ভ্রমণ গন্তব্য আছে যা সাধ্যের মধ্যে আপনাকে দিতে পারে অনন্য এক অভিজ্ঞতা। পাহাড়, সমুদ্র আর ঐতিহাসিক নিদর্শনের এক অপূব সমন্বয় ভিয়েতনাম। নিরাপদ ও সুন্দর এই দেশটিতে রয়েছে জনপ্রিয় সব দর্শনীয় স্থান। চলুন, এই ভ্রমণ নিবন্ধে ভিয়েতনাম ঘুরতে যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ভিয়েতনামের ভৌগলিক অবস্থান
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ৩ লাখ ৩১ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি দেশ ভিয়েতনাম। এর উত্তরে চীন এবং পশ্চিমে লাওস ও কম্বোডিয়ার স্থল সীমানা। আর সামুদ্রিক সীমানা ভাগ হয়েছে থাইল্যান্ডের উপসাগরের মধ্যে দিয়ে থাইল্যান্ডের সঙ্গে এবং দক্ষিণ চীন সাগরের মধ্যে দিয়ে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার সঙ্গে।
ভিয়েতনামের নামকরণের ইতিহাস
সর্বপ্রথম ২য় শতাব্দীতে ‘ন্যানিউ’ বা ‘নাম ভিয়েত’ শব্দের নিদর্শন পাওয়া যায়, যেটি মূলত বর্তমান ‘ভিয়েতনাম’ শব্দেরই উল্টো রূপ। এর মধ্যে ‘ভিয়েত’ শব্দটি প্রাচীন মধ্য চীনা ভাষার, যা সর্বপ্রথম দেখা যায় একটি কুঠারে শিলালিপি আকারে। কুঠারটি ছিল ১ হাজার ২০০ খ্রিস্টপূর্বে শ্যাঙ রাজবংশের শেষ দিকে ওরাকল নামের বিশেষ হাড় এবং ব্রোঞ্জের অংশ।
খ্রিস্টপূর্ব ৭ম এবং ৪র্থ শতাব্দীর মধ্যে নিচু ইয়াংজি অববাহিকার ইউ রাজ্য ও এর জনগণকে বোঝানো হতো ‘ইউ’ বা ‘ভিয়েত’ শব্দ দিয়ে। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী থেকে এই একই শব্দ ব্যবহার করা হয় দক্ষিণ চীন এবং উত্তর ভিয়েতনামের অ-চীনা জনগোষ্ঠীকে বোঝাতে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায়, জনপ্রিয় স্থান ও খরচ
১৭ এবং ১৮ শতকের মাঝামাছি সময়ে শিক্ষিত ভিয়েতনামিরা নিজেদেরকে প্রকাশ করতো ‘নোই ভিয়েত’ (ভিয়েত জনগণ) বা ‘নোই নাম’ (দক্ষিণের জনগণ) বলে।
‘ভিয়েত’-এর পরে ‘নাম’ শব্দটির উপস্থাপন সর্বপ্রথম দেখা যায় ১৬ শতকের কবিতা স্যাম ত্র্যাঙ তৃণ-এ। এছাড়া ১৬ ও ১৭ শতকে ১২টি পাথুরে স্তম্ভেও খোদাই করা অবস্থায় পাওয়া যায় ‘ভিয়েতনাম’ শব্দটি।
১৯ শতকের শুরুর দিকে নুইয়েন রাজবংশের রাজা গিয়া লং ‘আনাম’ নামের রাজ্য দখল করেন। তিনি ‘আনাম’-এর নাম বদলে ‘ভিয়েত’ বা ‘ন্যানিউ’ রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কিং রাজবংশের সম্রাট জিয়াকিং তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। কারণ নামটি কিং সাম্রাজ্যের সেনাপ্রধান ঝাও তুওর এলাকা ‘ন্যানিউ’ নামটির সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। এছাড়া এই ন্যানিউয়ের মধ্যে দক্ষিণ চীনের জায়গা গুয়াঞ্জি এবং গুয়াংডংও ছিল। পরবর্তীতে সম্রাট জিয়াংকিং অঞ্চলটির জন্য সেই ‘ভিয়েতনাম’ শব্দটি পছন্দ করেন।
১৮০৪ এবং ১৮১৩ সালের মধ্যে সম্রাট গিয়া লং ‘ভিয়েতনাম’ নামটি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করেন। নামটির পুনর্ব্যবহার হয়েছিল ২০ শতকের গোড়ার দিকে ফ্যান বই চোউয়ের ‘ভিয়েতনামের ক্ষতির ইতিহাস’ বইতে। পরে ভিয়েতনামের জাতীয়তাবাদী দল বেশ জোরেসোরে নামটির প্রচারণা চালায়।
আরও পড়ুন: ঈদ অবকাশ: ভিসা-মুক্ত এশিয়ায় সেরা ভ্রমণ গন্তব্য
এরপরেও ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ‘আনাম’ নামেই পরিচিত ছিল অঞ্চলটি। অতঃপর বর্তমান ভিয়েতনামের উত্তর মধ্য উপকূলীয় সাম্রাজ্য হুয়ে সরকার এই অঞ্চলের জন্য ‘ভিয়েতনাম’ নামকে চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই নামটিই অপরিবর্তিত হয়ে আছে।
৬ মাস আগে
থাইল্যান্ডের ক্রাবি ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দ্বীপদেশের মনমুগ্ধতার নেপথ্যে রয়েছে রোদের আলোয় চিকচিক করা বালি আর আলোক ছটা দেওয়া ঢেউ। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বালুকাবেলায় ঝিনুকের আঁকিবুকিগুলো যেন সাবধানে পা ফেলতে বলে সৈকতপ্রেমিককে। এরপরেও উপেক্ষা করা যায় না খালি পায়ে হাঁটা বা সূর্যস্নানের হাতছানি। সমুদ্রের বিশাল বিস্তৃতির উপর দিয়ে লালিমার দিগন্ত রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়া এক অদ্ভূত শিহরণ জাগিয়ে তোলে।
এই প্রতিটি উপাচারকে সঙ্গে নিয়ে মহাদেশগুলোতে বিচিত্রভাবে সেজে ওঠে সমুদ্রবিলাস। এমনি একটি মহাদেশ এশিয়া, যেটি বিশ্বের সেরা দ্বীপদেশগুলো নিয়ে যুগ যুগ ধরে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান ধরে রেখেছে। এমনকি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় কিছু পর্যটন স্থান পরম যত্নে লালন করে চলেছে মনোরম সব সমুদ্র সৈকত। তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ মিলবে থাইল্যান্ডের ক্রাবিতে গেলে। চলুন, অনন্য নান্দনিকতায় ভরপুর ক্রাবি ভ্রমণের আদ্যোপান্ত জেনে নেওয়া যাক।
ক্রাবির ভৌগলিক অবস্থান
দক্ষিণ থাইল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলের ক্রাবি প্রদেশের রাজধানীর নাম ক্রাবি। চুনাপাথরের কার্স্ট এবং ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে অবস্থিত এই শহর থেকে ক্রাবি নদী ফাং নাগা উপসাগরের সঙ্গে মিশেছে। আন্দামান উপকূলের কাছাকাছি এই রিসোর্ট শহরটি ব্যাংকক থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
ক্রাবির নামকরণের ইতিহাস
এই শহরের নাম নিয়ে দুটি গল্প প্রচলিত আছে। প্রথম গল্পটি একটি প্রাচীন তলোয়ার নিয়ে। একবার এই স্থানের অধিবাসীরা এখানকার মাটি থেকে অতিকায় একটি তলোয়ার খুড়ে বের করে। এই তলোয়ারটি পরে প্রদেশের গভর্নরের কাছে পেশ করা হয়। এরপর আরও একটি তলোয়ার মাটি খুড়ে বের করা হয়, তবে এবারেরটা একটু ছোট ছিল। এটিও সেই গভর্নরের কাছে সোপর্দ করা হয়। গভর্নরসহ তখনকার সাধারণ মানুষ এই তলোয়ার দুটিকে বেশ মূল্যবান এবং পবিত্র বলে মনে করতেন। অতঃপর গভর্নরের নির্দেশে তলোয়ার দুটিকে আড়াআড়িভাবে ‘খাও কানাব নাম’ নামে একটি গুহায় স্থাপন করা হয়। এই তলোয়ার দুটির নাম ছিল ক্রাবি। যেটির নামেই পরবর্তীতে এই স্থানের নামকরণ হয়। বর্তমানে পর্যটকরা ক্রাবিতে ঘুরতে যেয়ে একবার হলেও এই তলোয়ার দুটিকে দেখে যান।
আরও পড়ুন: আইসল্যান্ড ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
দ্বিতীয় গল্পটি লুম্ফি নামের একটি গাছ নিয়ে। চীনা এবং মালয় বণিকরা এটিকে খো-লো-বি কিংবা কা-লু-বি উচ্চারণ করতো। কিন্তু এই দুই শব্দই ছিল ভুল। আর এই ভুল শব্দেই জায়গাটি কয়েক যুগ ধরে পরিচিত থাকে। পরে পাওয়া যায় যে, সেই ভুল শব্দগুলোর সঠিক শব্দ হচ্ছে ক্রাবি। অবশেষে এই নতুন নামেই জায়গাটি ব্যাপকভাবে পরিচিতি লাভ করে।
৬ মাস আগে
সোনাদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের উপকূল থেকে বিশাল জলরাশির উপর বঙ্গোপসাগরের বিস্তৃত বুককে আশ্রয় করে আছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলো। চর নামের প্লাবনভূমিগুলো অঙ্গে ধারণ করে আছে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপের পলি মাটিকে। এই দ্বীপপুঞ্জের প্রত্যেকটিতে আছে আদিম জীবনের ঘ্রাণ। আছে অপরিচিত সম্প্রদায়ের মাঝে সাবলীল প্রবেশাধিকার। জেলে গ্রামগুলোর সংগ্রামী দিন যাপন, আতিথেয়তা, আর সংস্কৃতি নিমেষেই আপন করে নেয় স্তম্ভিত পর্যটককে। এমনি শত শত দ্বীপের মাঝে অন্যতম একটি দ্বীপ সোনাদিয়া। সমুদ্র-বিলাসীদের এই চিরন্তন গন্তব্যে পাড়ি জমাতে চলুন, এই দ্বীপাঞ্চলে ভ্রমণ নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সোনাদিয়ার ভৌগলিক অবস্থান
বাংলাদেশের জনপ্রিয় পর্যটন স্থান কক্সবাজার থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত মহেশখালী। এই উপজেলার অন্তর্গত কুতুবজোম ইউনিয়নের ছোট্ট একটি দ্বীপ সোনাদিয়া। প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটারের এই দ্বীপটি একটি খাল দ্বারা বিচ্ছিন্ন হয়েছে মহেশখালী দ্বীপ থেকে।
ভূতত্ত্ববিদ ও ভূগোলবিদদের মতে, বাঁকখালী নদীর স্রোতধারা ও মহেশখালী প্রণালীর সঙ্গে সাগরের ঢেউয়ের সংঘর্ষে এই দুই এলাকার ঠিক মাঝে বালি জমে জমে জন্ম নিয়েছে সোনাদিয়া দ্বীপ।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের বাকলাই জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলাদেশের অন্যতম সুউচ্চ ঝর্ণায় যাবার উপায় ও খরচ
সোনাদিয়া দ্বীপের নামকরণের ইতিহাস
১০০ থেকে ১২৫ বছর আগে সাগরের মাঝে জেগে ওঠা এই চরে মানুষের বসতি গড়ে উঠে। এরই মাঝে এ দ্বীপের সঙ্গে জড়িয়ে যায় রোমাঞ্চকর সব কিংবদন্তি।
একদা এক বিদেশী জাহাজ মহেশখালীর উপকূলের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় পর্তুগিজ জলদস্যুদের কবলে পড়ে। মালবাহী এই বাণিজ্যিক জাহাজে ছিল প্রচুর পরিমাণ স্বর্ণ। নাবিকদের সঙ্গে জলদস্যুদের সংঘর্ষে পুরো জাহাজটি সাগরের নিচে তলিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই দূর্ঘটনাস্থলে বালি ও পলি জমে আস্ত এক দ্বীপের সৃষ্টি হয়। স্বর্ণবাহী জাহাজডুবির ঘটনার কারণে স্থানীয় জেলেদের মাঝে দ্বীপটি স্বর্ণ দ্বীপ বা সোনাদিয়া দ্বীপ নামে পরিচিতি পায়।
এই জায়গাটি নিয়ে লোকমুখে আরও মজার মজার গল্প শোনা যায়। প্রায় পৌনে তিনশ’ বছর আগের কথা। একবার লুতু বহদ্দার নামের এক জেলের জালে এক অদ্ভূত ও রহস্যময় পাথর ধরা পড়ে। পাথরটি সে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে আসে এবং তা ঘরে ঢোকার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ: বাংলার দার্জিলিং যাওয়ার উপায় ও খরচের বৃত্তান্ত
একদিন এক নাপিত এই সিঁড়িতে বসে কাঁচিতে ধার দেওয়ার সময় অসাবধানে পাথরটি ভেঙ্গে ফেলে। আর সঙ্গে সঙ্গেই তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে একটি স্বর্ণমুদ্রা। অতঃপর বহদ্দার ও নাপিত সেই স্বর্ণমুদ্রা বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। লুতু বহদ্দার যে স্থানে জাল ফেলেছিল সেটি ছিল মূলত একটি চরের সৈকত। আর সেই চরটিই আজকের সোনাদিয়া দ্বীপ।
কেউ কেউ মনে করেন, এক সময় এখানে মুক্তার চাষ হতো। সেই মুক্তা কেনা-বেচা হতো স্বর্ণের দামে। আর এই কারণেই দ্বীপের নামকরণ করা হয় সোনাদিয়া।
৬ মাস আগে
শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায়, জনপ্রিয় স্থান ও খরচ
ভারত মহাসাগরের বুকে এক ফোটা অশ্রুবিন্দু কিংবা নাশপাতি বা আমের আকৃতির এক খণ্ড দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। ভারতীয় উপমহাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করেছে মান্নার উপসাগর ও পল্ক প্রণালী। শ্রীলঙ্কার উত্তর-পূর্বে বঙ্গোপসাগর, উত্তর-পশ্চিমে ভারতের সামুদ্রিক সীমান্ত, এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে মালদ্বীপ। প্রাকৃতিক নৈসর্গ, ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থান এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এই এশিয়ার দেশটিকে নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন, শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় কয়েকটি পর্যটন এলাকা ও সেখানে ভ্রমণ সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশিদের জন্য শ্রীলঙ্কার পর্যটন ভিসা
শ্রীলঙ্কায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশিদের ইটিএ (ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন) ভিসা নিতে হবে। এই ডিজিটাল ছাড়পত্রের জন্য ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করা যায়। এর জন্য শ্রীলঙ্কার অভিবাসনের ইটিএ সিস্টেম (https://eta.gov.lk/etaslvisa/etaNavServ?payType=1)-এ যেয়ে আবেদন সম্পন্ন করে সাবমিট করতে হয়। এই সিস্টেমেরই চেক স্ট্যাটাস (https://eta.gov.lk/etaslvisa/pages/checkStatus.jsp) থেকে জমাকৃত আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা যাচাই করা যায়।
সফলভাবে জমাকৃত আবেদন নিরীক্ষণের পর আবেদনকারীকে অনলাইনেই একটি স্বীকৃতি পত্র দেওয়া হয়। এটি ইটিএ ভিসার একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি, যেটি প্রিন্ট করে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের পূর্বে অভিবাসন কর্মকর্তাকে দেখাতে হয়। এ সময় শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের চূড়ান্ত অনুমতি প্রদানের পূর্বে যাত্রীর আরও কিছু বিষয় যাচাই করা হয়। সেগুলো হলো:
- যাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ সেই দিন তথা শ্রীলঙ্কায় আগমনের তারিখ থেকে আরও ৬ মাস আছে কি না
- ফিরতি টিকিট কাটা আছে কি না
- শ্রীলঙ্কায় যতদিন থাকা হবে তার জন্য যাত্রীর কাছে পর্যাপ্ত তহবিল আছে কি না
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ১০ দর্শনীয় স্থান: শীতের ছুটিতে সাধ্যের মধ্যে ভ্রমণ
প্রাথমিকভাবে ইটিএ ভিসা ৩০ দিনের জন্য ইস্যু করা হয়। এই ভিসার ফি ২০ মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ১৯২ দশমিক ১০ টাকা (১ মার্কিন ডলার = ১০৯ দশমিক ৬১ বাংলাদেশি টাকা)। এই ফি’টা মূলত বাংলাদেশে অবস্থান করে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের সময় বিমানবন্দর থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে আবেদন করে ভিসা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ফি ২৫ মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ৭৪০ দশমিক ১৩ টাকা। অনূর্ধ্ব ১২ বছরের শিশুদের জন্য কোনও ফি রাখা হয় না।
শ্রীলঙ্কার বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ডলারের সমমূল্যের শ্রীলঙ্কান রুপিতে ভিসা ফি জমা দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য শ্রীলঙ্কা যাওয়ার উপায়
তুলনামূলকভাবে কম খরচে শ্রীলঙ্কা গমনের জন্য ভারত হয়ে যাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্য প্রয়োজন হবে ভারতের ডাবল এন্ট্রি ভিসা। এই ভিসা ঢাকার শ্রীলঙ্কান দূতাবাস থেকে সংগ্রহ করতে হয়।
অন্যদিকে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় যেতে না চাইলে সর্বোত্তম পথ ইটিএ ভিসা। এতে বেশি খরচ হলেও সরাসরি শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর প্লেন ধরা যায়, যেখানে সময় অনেক কম লাগে।
ভিসা শর্তানুযায়ী আগে থেকেই যাওয়া-আসার টিকিট আগেই করতে হবে। এই বিরতিহীন (যাওয়া/ আসা) যাত্রায় সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। ঢাকা-কলম্বো রাউন্ড ট্রিপ বিমান ভাড়া নির্ভর করবে কিছু বিষয়ের উপর যেমন এয়ারলাইন্স কোম্পানি, বুকিংয়ের সময়, বিভিন্ন অফার, ইত্যাদি।
কলম্বো থেকে শ্রীলঙ্কার আভ্যন্তরীণ প্লেন ছাড়াও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার জন্য রেলপথের ব্যবস্থা আছে।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় পর্যটন স্থানসমূহ
নুওয়ারা এলিয়া
মধ্য শ্রীলঙ্কার এই শহরটি ‘চায়ের দেশ’ এবং একই সঙ্গে ‘মিনি ইংল্যান্ড’ নামেও পরিচিত। কেননা এখানে আছে ভিক্টোরিয়া পার্ক, লেক গ্রেগরি, হরতন প্লেইন্স ন্যাশনাল পার্ক, পেড্রো টি ফ্যাক্টরি, হাকগালা বোটানিক্যাল গার্ডেন, সীথা আম্মান মন্দির। চোখ ধাঁধানো দৃশ্যের অবতারণা করে লাভারস লিপ ফল্স এবং রাম্বদা ফল্স।
এখানেই শেষ নয়; হাইকিংয়ের সময় আরও দেখা যায় আবেরদিন ঝর্ণা এবং সেন্ট ক্লেইয়ারস ঝর্ণা।
৭ মাস আগে
ঈশা খাঁ'র জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ভ্রমণ গাইড, আনুষঙ্গিক খরচ
বহু যুগের ঐতিহাসিক স্থাপনায় সমৃদ্ধ বাংলার জনপদ সাক্ষী হয়ে আছে নানান সময়ের স্থাপত্য শিল্পকর্মের। এমনকি নদীমাতৃক বাংলাদেশ সেই জীবাশ্মগুলোকে বুকে ধারণ করে এখনও শুনিয়ে যায় উত্থান-পতনের কাহিনী। তেমনি একটি পুরাকীর্তি ঈশা খাঁ’র জঙ্গলবাড়ি দুর্গ, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঈশা খাঁ’র বীরত্বগাঁথা।
ষোল শতকের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার এখন আর আগের মত জৌলুশ না থাকলেও ইতিহাস উৎসাহীদের কাছে এটি একটি প্রিয় পর্যটন স্থান। এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি নিয়েই আজকের ভ্রমণ বিষয়ক নিবন্ধ। চলুন, জেনে নেয়া যাক- কিভাবে বারো ভূঁইয়াদের সময়কার এই স্থাপত্য নকশাকে খুব কাছ থেকে দেখবেন।
ঈশা খাঁ'র জঙ্গলবাড়ি দুর্গের অবস্থান ও বিশেষত্ব
ঢাকা বিভাগের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা কিশোরগঞ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা করিমগঞ্জ। এই করিমগঞ্জের অন্তর্গত কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের নরসুন্দা নদী বিধৌত একটি গ্রাম জঙ্গলবাড়ি। এই গ্রামেরই মধ্যমণি বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম নেতা ঈশা খাঁ’র স্মৃতিবাহী জঙ্গলবাড়ি দুর্গ। মসনদে-আলা-বীর ঈশা খাঁ এখানেই বানিয়েছিলেন তার দ্বিতীয় রাজধানী।
জঙ্গলবাড়ি দুর্গের ইতিহাস
ইংরেজদের ও মুঘলদের স্বৈরাচার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলার জমিদাররা গোপনে সাহায্য চেয়েছিলেন ঈশা খাঁ’র কাছে। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১ হাজার ৪০০ অশ্বারোহী, ২১টি নৌবিহার এবং গোলাবারুদ নিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে হাজির হন ঈশা খাঁ।
অতঃপর ১৫৮৫ সালে তৎকালীন কোচ রাজা লক্ষ্মণ হাজরা ও রাম হাজরাকে পরাজিত করে তিনি দখল করে নেন জঙ্গলবাড়ি দুর্গ। এই দুর্গ মূলত সেই কোচ রাজার আমলে তৈরি করা হয়নি। ধারণা করা হয়, এর গোড়াপত্তন হয়েছিলো প্রাক-মুসলিম যুগে।
আরও পড়ুন: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
তবে দুর্গ দখলের পর ঈশা খাঁ দুর্গটির সংস্কার করার সময় এর ভেতরে আরও কিছু স্থাপনা নির্মাণ করেন। এই দুর্গ থেকেই পরবর্তীতে তিনি ক্রমান্বয়ে সোনারগাঁও সহ ২২টি পরগণা দখল করেছিলেন।
১৫৯৯ সালে তার মৃত্যুর পর পুত্র মুসা খান সোনারগাঁওয়ের মসনদের আসীন হন। মুসা খাঁ বারো-ভূঁইয়াদের পক্ষে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মুঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। অবশেষে ১৬১০-এর ১৬ জুলাই মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সেনাপতি ইসলাম খানের কাছে তার পরাজয় হয়।
এ সময় ঈশা খাঁ’র বংশধররা সোনারগাঁও ত্যাগ করে আশ্রয় নিয়েছিলেন এই জঙ্গলবাড়ি দুর্গে।
বর্তমানে এই ঐতিহাসিক দুর্গ বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। ২০০৫-এর ১২ জুন স্থানীয় প্রশাসন দুর্গের ভেতরের দরবার কক্ষটি সংস্কার করে স্থাপন করে জাদুঘর ও পাঠাগার। নতুন সংস্কারকৃত কক্ষটিকে 'ঈশা খাঁ স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার' নাম দিয়ে উন্মুক্ত করা হয় দর্শনার্থীদের জন্য।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
৯ মাস আগে
মহেশখালী ভ্রমণ গাইড: বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপে যাওয়ার উপায়, আনুষঙ্গিক খরচ
দীপাঞ্চল ভ্রমণ মানেই বিচ্ছিন্ন কোনো ভূখণ্ডে সাগর ও আকাশের দিগন্তরেখায় অর্ধচন্দ্র ডিঙি নৌকার মিলিয়ে যেতে দেখা। যেখানে ঢেউয়ের পিঠে চেপে যাযাবর পলিমাটি ঠিকানা খুঁজে পায় প্রাণবন্ত গ্রামগুলোর কাঁচা সৈকতে। বঙ্গোপসাগরের সংস্পর্শে থাকায় সবুজ বাংলাদেশের ভ্রমণকারীরাও পরিচিত এমন দৃশ্যের সঙ্গে। তবে দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ হওয়ার বিশেষত্বটা মহেশখালীকে আলাদা করেছে আর সব উপকূলবর্তী অঞ্চল থেকে। শুধুই কি পাহাড়ের চূড়া থেকে পাখির চোখে দ্বীপ দর্শন! এখানে আছে দেশের অকৃত্রিম সব সৌন্দর্য্যের উপাদান।
চলুন, বাংলাদেশের এই ল্যান্ডমার্ক দর্শনীয় স্থান মহেশখালী দ্বীপে ভ্রমণের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মহেশখালীর ভৌগলিক অবস্থান ও বিশেষত্ব
চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত প্রশাসনিকভাবে স্বীকৃত এক উপজেলা মহেশখালী। ৩৬২ দশমিক ১৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলাটি মহেশখালী, সোনাদিয়া, মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা- এই চারটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ভ্রমণের উপায় ও খরচ
এর পূর্বে রয়েছে কক্সবাজার সদর ও চকরিয়া উপজেলা এবং পশ্চিমে কুতুবদিয়া উপজেলা ও বঙ্গোপসাগর। উত্তরে চকরিয়া উপজেলা এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও কক্সবাজার সদর উপজেলা।
মহেশখালীর নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মিষ্টি পানের সুখ্যাতি। সেই সঙ্গে চিংড়ি, লবণ ও মুক্তা চাষের জন্যও স্থানটি দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে পরিচিত।
১৫৫৯ সালের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সৃষ্টি হয় মহেশখালী দ্বীপ। এর পাদদেশে প্রবাহিত চ্যানেল এবং পূর্ব প্রান্ত দিয়ে উত্তর দক্ষিণমুখী পাহাড় এখনও সেই সংযুক্তির চিহ্ন বয়ে চলেছে।
জনতা বাজার নামক জায়গাটিতে নতুন নির্মিত হওয়া মহেশখালী সেতু বর্তমানে মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে দ্বীপের সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করছে।
আরও পড়ুন: মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচ
১০ মাস আগে
খাগড়াছড়ির মায়ুং কপাল, হাতিমুড়া বা হাতি মাথা ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা দর্শনীয় স্থানগুলোতে নান্দনিকতার পাশাপাশি থাকে মৌলিকতার ছোঁয়া। তার অকৃত্রিমতা অপরিবর্তিত রেখে কিছু মানবসৃষ্ট অবকাঠামোর সংযোজন জায়গাটির সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। খাগড়াছড়ির মায়ুং কপাল, হাতিমুড়া, বা হাতি মাথা ঠিক এমনি একটি জায়গা, যার প্রাচীনতায় লেশমাত্র দাগ ফেলেনি মনুষ্য সৃষ্টকর্ম। উল্টো প্রকৃতির এই অপার বিস্ময়কে সাজিয়ে তুলেছে শৈল্পিক অলঙ্করণে। অদ্ভূত আকৃতির এই পাহাড় নিয়েই এবারের ভ্রমণকথা।
এমন মজার নামের রহস্য উদ্ঘাটনের পাশাপাশি চলুন জেনে নেয়া যাক- কোন কোন বিষয়গুলো জায়গাটির প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়েছে।
হাতিমুড়া বা মায়ুং কপালের অবস্থান ও বিশেষত্ব
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য চট্রগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার দুর্গম পাহাড় ঘেরা অন্যতম ইউনিয়ন পেরাছড়া। এই ইউনিয়নেরই সবচেয়ে দর্শনীয় পাহাড়টির নাম হাতি মাথা বা মায়ুং কপাল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২০৮ ফুট উচু এই পাহাড় নানা জনগোষ্ঠীর মোট ১৫টি গ্রামকে সযত্নে আগলে রেখেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী ভাঙ্গামুড়া, মাখন তাইসা পাড়া, বদলছড়া, হাজা পাড়া, কিনাপা পাড়া, কাপ্তালপাড়া, বাগড়া পাড়া, সাধুপাড়া, ও কেশব মহাজনপাড়া।
হাতি মাথার খাড়া পাহাড় বেয়ে পাহাড়ি জনগণের উঠানামার সুবিধার্থে ২০১৫ সালের ১৩ জুন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয় ৩০৮ ফুট দীর্ঘ লোহার সিঁড়ি। এই সিঁড়ি পথ দিয়ে পাহাড় চূড়ায় যেতে ৩০০টি ধাপ পেরোতে হয়।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার লালন শাহের মাজার ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
মায়ুং কপাল বা হাতি মাথা নামের উৎপত্তি
অদ্ভূত আকৃতির এই পাহাড় প্রাকৃতিকভাবেই গঠন পেয়েছে হাতির মাথার মত আর এ কারণেই ‘হাতি মাথা’ বা 'হাতিমুড়া' নামকরণ। ‘মায়ুং কপাল’ নামের উৎপত্তি এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ত্রিপুরাদের কাছ থেকে। তারা ‘হাতি’ বোঝাতে ‘মায়ুং’ এবং ‘মাথা’ বোঝাতে ‘কপাল’ শব্দ ব্যবহার করে, আর এ দুয়ে মিলেই পাহাড়ের নাম হয়েছে হাতি মাথা।
এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি নামে পরিচিত এই পাহাড়টি। স্থানীয়দের অনেকে একে হাতি মুড়া বলে ডাকে। চাকমাদের কাছে এটি ‘এঁদো সিরে মোন’ নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন:তাজিংডং ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও খরচ
মায়ুং কপাল পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
পাহাড়ি বনের মাঝ দিয়ে নির্মিত সিঁড়ির নিচ থেকে উপরের দিকে সিঁড়ির প্রান্ত দেখা যায় না। দেখে মনে হয় যেন সিঁড়ির ধাপগুলো আকাশেরও উপরে উঠে গেছে। আর তাই সিঁড়ি নির্মাণের পর থেকে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে পাহাড়ের দারুণ একটি নাম প্রচলিত হয়, আর সেটি হচ্ছে- ‘স্বর্গের সিঁড়ি’। এরকম নাম এবং সিঁড়ির অনিন্দ্য দৃশ্যের জন্যই গত কয়েক বছর ধরে পাহাড় ট্রেকারদের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাতি মুড়া
হাতি মুড়া পৌঁছার দীর্ঘ ট্রেইলপথের একঘেয়েমিতা দূর করেছে খরস্রোতা চেঙ্গি নদী। নদীর ওপর দিয়ে পাড়াপাড়ের জন্য রয়েছে কাঠের সাঁকো। এর পরে বিস্তৃত সমতল ভূমির দু’পাশে কোথাও জুম ক্ষেত, কোথাও বা ধু ধু প্রান্তর। এমন মাঠ পেরোতেই দেখা মিলবে অদ্ভূত নামের এক পাহাড়ি গ্রামের। ‘বানতৈসা’ নামের এই গ্রামে ত্রিপুরাদের বসবাস।
বানতৈসার পর স্বর্গের সিঁড়ির আগ পর্যন্ত আর কোনও জনপদ নেই। তবে উঁচু-নিচু রাস্তা ধরে এগোনোর সময় পাহাড়ের আনাচে-কানাচে চোখে পড়বে ছোট ছোট মাচাঘর। দীর্ঘ পায়ে হাঁটা পথে এখানকার কুয়া থেকে বরফ ঠান্ডা পানিতে গলা ভিজিয়ে নেয়া যায়।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
হাতিমাথা পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছতেই সামনে দেখা যাবে প্রায় ১২০ ডিগ্রি কোণ করে বেঁকে উপরের দিকে উঠে গেছে স্বর্গের সিঁড়ি। কমপক্ষে এক থেকে দেড় ঘন্টা লাগবে এই সিঁড়ি বেয়ে চূড়ায় পৌঁছতে।
স্বর্গে নিয়ে না গেলেও এই সিঁড়ির শেষ প্রান্ত পর্যটকদের পৌঁছে দেয় নয়নাভিরাম সুন্দর এক গ্রামে। সেই চূড়া থেকে প্রায় পুরো খাগড়াছড়ি শহরটাই দেখা যায়। মনে হয় যেন নেপাল বা ভুটানের কোনও পর্যটন স্পট।
১০ মাস আগে
বারিধারার ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউ: যেভাবে যাবেন, যা দেখবেন
প্রতি ক্ষেত্রফলে সর্বাধিক জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর একটি এই ঢাকা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিষ্প্রাণ আকাশচুম্বী অট্টালিকায় ভরে উঠেছে প্রাচীন এই শহর। আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ও যাতায়াত ব্যবস্থাকে সুগম করার পাশাপাশি এখানে সবুজায়নও অবধারিত হয়ে পড়েছে।
এই লক্ষ্য বাস্তবায়নেরই এক বিরাট পদক্ষেপ ঢাকার বারিধারার ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউ। পরিকল্পিত কতগুলো উপশহর গড়ে তুলে সেগুলোকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করার মহাপ্রকল্পকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যাবে এই সড়ক। চলুন, সদ্য চালু হওয়া অভিনব এই সড়কের আদ্যোপান্ত জেনে নেওয়া যাক।
৬ লেনের ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউ
রাজধানীর নতুনবাজার থেকে শুরু হয়ে বালু নদীর দিকে চলে যাওয়া সড়কটির নামের অঙ্কুর লুকিয়ে আছে পাকিস্থান শাসনের সময়ে। সে সময় ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন জিএ মাদানী। মূলত তার নামানুসারেই এই সড়কটির নাম হয়েছে মাদানী এভিনিউ।
রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে যানজটের চাপ কমাতে এই সড়কটিকে প্রশস্ত করার প্রকল্প চালু হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। তখন থেকেই এ প্রকল্পের আওতায় ৬ লেন সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। চলতি বছরে সড়কটিকে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এক্সপ্রেসওয়ে-এর সঙ্গে সংযুক্ত করার কাজ হাতে নেওয়া হয়।
১০০ ফুট প্রশস্ত এই সড়ক মোট ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। মূল প্রকল্পে দুটি সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ ছিল। প্রস্তাবিত সড়ক দুটোর একটি পূর্বাচল নতুন শহর থেকে ইউসুফগঞ্জ হয়ে এই মাদানী এভিনিউ পর্যন্ত ৩.৩ কিলোমিটার।
আর অন্যটি পশি, কেরিয়া এবং জলশিড়ি আবাসনের মধ্য দিয়ে প্রায় ৫.২৩ কিলোমিটার অগ্রসর হবে। মূলত এই দ্বিতীয় সড়কটিকে রূপ দেয়া হবে ৬লেনে। ৪টি এক্সপ্রেসওয়ে আর ২টি সার্ভিস লেন। বেরাইদ অঞ্চলে সড়কটির ৬ লেন ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ভ্রমণের উপায় ও খরচ
পুরো এই ৮.৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে নির্মাণাধীন আছে ৪টি সেতু ও ২টি কালভার্ট।
এই সড়কের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে বালু নদীর উপরে ৪৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের বালু সেতু। সংযোগ সড়ক মিলে ৫৯৩ মিটার এই সেঁতুটি দেখতে নড়াইলের ৬ লেন বিশিষ্ট মধুমতি বা কালনা সেতুর মতো।
এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় আরও আছে, ২১০ মিটার ৪টি সেতু প্রশস্তকরণ, ২০০ মিটারের নতুন ২টি সেঁতু নির্মাণ, এবং ৯০ মিটার সেঁতু প্রশস্তকরণ। পুরোদমে এগিয়ে চলছে ২ হাজার ৩৮৪ মিটারের ৪টি আন্ডারপাসসহ ৯০০ মিটারের ১টি ইউলুপ, এবং ৫০ মিটারের ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ কাজ।
১০০ ফিট সড়কটির অবস্থান
মাদানি এভিনিউ সড়কটি পড়েছে ঢাকার ভাটারা থানায়। বারিধারার মার্কিন দূতাবাস তথা নতুন বাজার থেকে এর শুরু। বালু নদী পেরিয়ে সোজা শেষ হয়েছে গিয়ে নারায়ণগঞ্চের রূপগঞ্জে। অবশ্য মধ্যপথে বালু ব্রিজের পর জলশিড়ি আবাসন সংলগ্ন স্থানে মোড় নিয়ে সড়কটি চলে গেছে পূর্বাচল ৩০০ ফিট এক্সপ্রেসওয়ের দিকে।
মাদানী এভিনিয়ের রুপগঞ্জ প্রান্তে রয়েছে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত বীর প্রতীক গাজী সেতু।
অর্থাৎ সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে এ পথ ধরেই পূর্বাচল হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম বা সিলেট মহাসড়কের দিকে যাওয়া যাবে। এছাড়া এই পথটি কুড়িল বিশ্বরোডের উপর চাপ কমাবে। পূর্বাচল থেকে এই পথে সরাসরি গুলশান-২ এবং বেরাইদ ও নতুন বাজার হয়ে রামপুরায় প্রবেশ করা যাবে।
আরও পড়ুন: মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচ
১ বছর আগে
ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক: কীভাবে যাবেন, কী দেখবেন
অবকাঠামোগত উন্নয়নে ধীরে ধীরে অনেকটা পথ এগিয়ে গেছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। স্বভাবতই দেশজুড়ে দিন বদলের এই হাওয়ার সবচেয়ে বেশি সান্নিধ্য পেয়েছে রাজধানী ঢাকা। ছোট্ট ভূখণ্ডে আকাশসম জটিলতা নিয়ে বিশ্বমানের সভ্যতার সঙ্গে তাল মেলানো শুরু করেছে প্রায় ৪০০ বছরেরও পুরানো এই শহর। ঢাকার পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক বজ্রকণ্ঠে যেন তারই ঘোষণা দিচ্ছে। উপশহর গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ঢেলে সাজানো এই বিস্তৃত অঞ্চলটি ইতোমধ্যে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়েতে। চলুন, খুব শিগগিরই উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা নতুন এই মাইলফলকের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্ব মানের ৩০০ ফিট সড়ক
সংশোধিত নকশায় ২৩৫ ফিট হলেও পূর্বের নামেই এখনও পরিচিত কুড়িল থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়েটি। মূলত প্রস্থ বরাবর ৩০০ ফিট সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সূচনালগ্ন থেকেই প্রসিদ্ধি লাভ করে ৩০০ ফিট নামটি।
এখন কুড়িল থেকে সড়কটি ১৪ লেনে ভাগ হয়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার চলে গেছে বালু ব্রিজ পর্যন্ত। ১৪ লেনের ৮টি এক্সপ্রেসওয়ে, যে পথে দ্রুতগামী যানবাহনগুলো ঢাকার বাইরে থেকে যাওয়া-আসা করবে। আর ৬টি হলো সার্ভিস রোড, যেগুলোতে চলাচল করবে স্থানীয় গাড়িগুলো।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের নাফাখুম জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলার নায়াগ্রাতে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
তারপর বালু ব্রিজের পর থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়কটি ১২ লেনের। এখানে ৬টি এক্সপ্রেসওয়ে, ৬টি সার্ভিস রোড।
এগুলোতে না আছে কোনো স্টপওভার পয়েন্ট, না কোনো ট্র্যাফিক সিগনাল। কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আপন গতিতে চলতে পারবে প্রতিটি যানবাহন। সার্ভিস লেন থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে যাওয়ার জন্য পুরো সড়কটিতে নির্দিষ্ট দূরুত্ব পর পর রয়েছে মোট ৫টি এ্যাটগ্রেড ইন্টার-সেকশন। এগুলোর নিচের আন্ডারপাস বা পাতাল সড়ক দিয়ে গাড়িগুলো চলে যেতে পারে এক্সপ্রেসওয়েতে। এরকম পাতাল সড়ক রয়েছে ১২টি।
বালু ব্রিজসহ ৬টি প্রশস্ত সেতু তো আছেই, সেই সঙ্গে হাতিরঝিলের আদলে বানানো হয়েছে ১৩টি আর্চ ব্রিজ। এগুলোর মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী এলাকার ছোট ও মাঝারি গাড়িগুলো সার্ভিস লেন হয়ে ঢুকতে পারে মূল সড়কে। পাখির চোখে দেখলে ৪টি আইলুপ আলাদা করে দৃষ্টি কাঁড়ে।
এছাড়াও রয়েছে ৩০০ ফিটের সব থেকে চোখে পড়ার মতো বিষয় হচ্ছে সড়কের দু’পাশে ১০০ ফুটের দৃষ্টিনন্দন খাল। এর পাশ দিয়ে ৩৯ কিলোমিটার পায়ে হাটা পথ রীতিমতো উদ্যানে পরিণত করেছে জায়গাগুলোকে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে
৩০০ ফিটে রয়েছে ১টি পাম্প হাউজ এবং খালের পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে ৫টি স্লুইস গেট। পানি গিয়ে মিলিত হয়েছে বালু নদীতে।
বর্ষা মৌসুমে আশেপাশের আবাসিক এলাকাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসণকল্পে আরও খাল খননের কাজ চলছে। পার্শ্ববর্তী ডুমনি, বোয়ালিয়া ও এডি-৮ খালের পানি এক হয়ে এসে মিশবে এই ১০০ ফুট খালের সঙ্গে। এডি-৮ খাল খনন করা হবে ৪ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ করে, আর বোয়ালিয়া খাল হবে ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ। ৪ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ করে খনন করা হবে ডুমনি খাল। ৩০০ ফিট সড়কের খালের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনটি খালেরই প্রস্থ ১০০ ফুট রাখা হবে।
বোয়ালিয়া, এডি-৮ ও ১০০ ফুট খালের পানি এক হয়ে গিয়ে পড়বে বালু নদীতে। অন্যদিকে খননের পর ডুমনি খালটি যুক্ত হবে পাশের কাঁঠালিয়া খালের সঙ্গে, যার শেষ গন্তব্য বালু নদী। ফলে ডুমনি খালেরও বালু নদীতে বের হওয়ার পথ থাকবে।
আরও পড়ুন: মিরসরাই খৈয়াছড়া ঝর্ণা: যাওয়ার উপায় ও ভ্রমণ খরচ
এতে করে নিকুঞ্জ, বারিধারা ডিওএইচএস, বারিধারা, জোয়ারসাহারা, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সেনানিবাস, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, কালাচাঁদপুর, কাওলাসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
ঢাকার ৩০০ ফিট সড়কের অবস্থান
সড়কটির অবস্থান ঢাকার উত্তর-পূর্ব দিকে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানায়। শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর মাঝখানে প্রায় ৬২১৩ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে মনোরম সড়কটি। ঢাকার সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের সংযোগ স্থাপন করেছে এই বিরতিহীন সড়কটি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, নারায়ণগঞ্চ, নরসিংদী, গাজীপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, ও কিশোরগঞ্জ। মূলত ৩০০ ফিটের মাধ্যমে ঢাকার পশ্চিমাংশের সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের যাতায়াত পথ সুগম হয়েছে।
বিমান বন্দর সড়ক ও প্রগতি সরণির সঙ্গে ঢাকার পূর্বের ইস্টার্ন বাইপাসের সংযোগ ঘটায় বহিরাগতরা ঝামেলাবিহীন ভাবে নানা গন্তব্যে যেতে পারবেন।
এছাড়া ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে নামে নির্মাণাধীন এক্সপ্রেসওয়েটি পূর্বাচল ১০০ ফিট মাদানী এভিনিউকে সংযুক্ত করবে এই এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ভ্রমণের উপায় ও খরচ
১ বছর আগে
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
সত্যিকার অর্থেই যদি বনভোজনের স্বাদ পেতে হয়, তাহলে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর বন-জঙ্গলের কোনো বিকল্প নেই। অরণ্যের আনাচে-কানাচে কিছু পাহাড়ি টিলা উঁকি দিলে মন্দ হয় না। এমন প্রাকৃতিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায় সিলেটের পথে বাংলাদেশের চা বাগানগুলোতে। আর তা যদি হয় বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বৃষ্টিবন এলাকা তাহলে তো কথাই নেই! বলছি দেশের ১০টি জাতীয় উদ্যান এবং ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের মধ্যে অন্যতম লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের কথা। চলুন, জেনে নেওয়া যাক- এই বুনো বাস্তুতন্ত্রে পদচিহ্ন এঁকে দেওয়ার উপায়।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের নামকরণ
ভানুগাছ অঞ্চলে জুম চাষকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল ত্রিপুরা গ্রাম। ত্রিপুরা ভাষায় লাউয়াছড়া বনকে মৈলপতুইসা বলা হয়। মৈলপ মানে লাউ, আর তুইসা শব্দের অর্থ পাহাড়ি ছড়া। যে বনের ছড়ার ধারের জুমে লাউয়ের ফলন ভালো হয়, সেই এলাকাকে বলা হতো মৈলপতুইসা।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের নাফাখুম জলপ্রপাত ভ্রমণ: বাংলার নায়াগ্রাতে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
১৯২৫ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার পুরো অঞ্চলটি অধিকার করে এখানে বৃক্ষায়ন শুরু করে। ইতোমধ্যে অরণ্যে রূপ নেওয়া মৈলপতুইসা ঘোষিত হয় সংরক্ষিত বন হিসেবে। ভানুগাছের পশ্চিমে থাকার কারণে এর নাম ছিল পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বন। ১৯২৭ সালে উপনিবেশিক বন আইন জারির পর এখানকার বিভিন্ন স্থানের নামে পরিবর্তন আনা হয়। আর এ সময়েই মৈলপতুইসা বদলে হয়ে যায় লাউয়াছড়া।
১৯৯৬ সালে ১৯৭৪-এর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংশোধন আইন অনুসারে বনের নামের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয় জাতীয় উদ্যান শব্দ দুটি।
১ বছর আগে