আরও পড়ুন: পর্যটন খাতের পুনর্জাগরণে স্থানীয় পর্যায়ে যেতে হবে: বিশেষজ্ঞরা
সরেজমিনে ইউএনবির এ প্রতিনিধি দেখেছেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ১০ মাসের অধিক সময় ধরে ঘরবন্দি জীবন কাটিয়ে যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি দূর করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা এখন পাহাড় আর হ্রদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে রাঙ্গামাটি ছুটে আসছেন। বর্তমানে আগত পর্যটকরা রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত সেতুসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঝুলন্ত সেতু ছাড়াও রাঙ্গামাটিতে পর্যটনের আকর্ষণীয় স্পটের মধ্যে শুভলং ঝর্ণা, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীদের যাদুঘর, ডিসি বাংলো, পলওয়েল পার্ক, কাপ্তাই লেক, পেদাটিংটিং, টুকটুক ইকো ভিলেজসহ কাপ্তাই লেকের পাড়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: পর্যটন করপোরেশনকে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে হবে: প্রতিমন্ত্রী
এছাড়া রাঙ্গামাটি শহরে সেনাবাহিনী পরিচালিত আরণ্যক হলিডে রিসোর্টে দৃষ্টিনন্দন ওয়াটার পার্ক ‘হ্যাপি আইল্যান্ড’ রয়েছে। তবে রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। ১৯৮৫ সালে দুই পাহাড়ের মাঝখানে তৈরি করা হয় এই আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি। তাই পর্যটকরা এসে প্রথমেই ছুটে যান পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায়। বছরে আনুমানিক প্রায় দুই লাখ দেশি ও বিদেশি পর্যটক সেতুটি দেখতে আসেন।
পর্যটকদের আনাগোণায় পর্যটনস্পটগুলোতে মৌসুমি ফলের ব্যবসাসহ অন্যান্য ব্যবসাও জমে উঠেছে। ফলে করোনাভাইরাসের কারণে প্রাণহীন এলাকাগুলোতে সাময়িকভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে রাঙ্গামাটির অর্থনীতিও। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় খুশি হলেও পর্যটন স্পটগুলোর সংস্কার ও যুগোপযোগী না হওয়ায় অনেক পর্যটকই হতাশা ব্যক্ত করেছেন। সীমাবদ্ধতা স্বীকার করে খুব শিগগিরই সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: করোনার ক্ষত কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কুমিল্লার পর্যটন শিল্প
অন্যদিকে, পর্যটনখাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। তবে ধীরে ধীরে আবারও আগের চেহারায় ফিরছে পর্যটনখাত। এমন পর্যটক সমাগম থাকলে করোনায় যে ক্ষতি হয়েছে তা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন তারা।
রাঙ্গামাটি হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘তিন দিনের টানা ছুড়িতে এখানে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। এছাড়াও ছুটির দিনেও পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। শীত মৌসুমের শেষ দিকে ভালো সাড়া পাচ্ছি আমরা। আগে থেকেই বুকিং হয়ে থাকায় প্রতিটি হোটেল মোটেল পর্যটকে পরিপূর্ণ।’
এব্যাপারে পর্যটন টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি সহ সভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, দীর্ঘদিন করোনাভাইরাসের পর এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের আগমন বাড়ায় এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: দেশের কোভিডের ক্ষত কাটাতে সাহায্য করতে পারে সমুদ্র পর্যটন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, ‘এই ছুটিতে রাঙ্গামাটির সরকারি পর্যটন মোটেলের শতভাগ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। শহরের অন্যান্য আবাসিক হোটেলেও একই অবস্থা। আর করোনার কারণে পর্যটকদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার সব রকম ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ পর্যটনস্পটগুলো আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভ্রমণপিপাসু মানুষে মুখরিত মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্র
রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের জন্য এসব পর্যটনস্পটগুলো সংস্কার করে আরও বেশি যুগোপযোগী করা গেলে পার্বত্য রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।