শুরু হয়ে গেছে ২০২২ এর ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ! এখনো যারা ‘দ্যা রাইট ওয়ান’-এর জন্য অপেক্ষা করছেন এমন সিঙ্গেলদের ভ্যালেন্টাইন ডে ক্যামন হতে পারে! অবশ্য যেখানে দ্বিতীয় কোন পক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করতে হয় না, সেখানে দিন রচনার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ নিজের খেয়াল-খুশির ওপরই বর্তায়। এর সঙ্গে একীভূত হয় সবার নিকট নিজেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেলে ধরা অথবা নিজের তৈরি আলাদা জগতটাকে আরও কারুকার্যমন্ডিত করার বিষয়টি। চলুন জেনে নিই এমন কিছু উদযাপন, যা যে কোন ধরনের সিঙ্গেলদের ভ্যালেন্টাইন্স ডে কে বিশেষ দিনে পরিণত করতে পারে।
শহরের বাইরে ঘুরতে যাওয়া
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহটি ঘুরাঘুরির জন্য শুধুমাত্র একটি ভনিতা হতে পারে। সঙ্গী হিসেবে বন্ধু-বান্ধব, পরিবার বা আত্মীয়-স্বজন যে কেউ হতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে সিঙ্গেলদেরই খুঁজে বের করতে হতে পারে। তবে সবকিছুকে উপেক্ষা করে ভ্যালেন্টাইন ডে’র ভোরবেলা একা একাই বেরিয়ে যাওয়া যায় ট্রাভেল ব্যাগ কাঁধে করে। দূর পাল্লার বাসে উঠে ফোনে প্রিয় গানগুলো নিয়ে তৈরি প্লেলিস্টটা ছেড়ে দিয়ে কানে এয়ারফোন লাগিয়ে দৃষ্টি রাখা যায় জানালার ওপাশে ছুটতে থাকা শহরে। দূরের কোন অজ-পাড়া গাঁ, বিলের বুকে নৌকায় ভেসে থাকা অথবা পাহাড় চূড়া থেকে পাখির চোখে নিচের লোকালয় দেখা নিমেষেই ভুলিয়ে দিতে পারে দিনক্ষণ।
আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইন ডে ২০২২: কয়েকটি সেরা ডিজিটাল উপহার
বন্ধুদের সাথে জম্পেশ আড্ডা
সিঙ্গেলদের ভ্যালেন্টাইন ডে মানেই প্রিয় কোন জায়গায় বসে বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা। হতে পারে সেটা পাড়ার টঙের দোকান অথবা বাসার ছাদে বা টিএসসির মোড়ে কিংবা চিত্রশালার খোলা উদ্যানে। ঝালমুড়ি, চা খাওয়ার ছুতোয় বেহিসাবি ঘণ্টাগুলো ভুলিয়ে দিতে পারে চারপাশের সবকিছুকে। যারা ইতোমধ্যে পড়াশোনার জীবন পার করে কর্মজীবনে প্রবেশ করে ফেলেছেন তারা প্রায়ই দুঃখ করেন ফেলে আসা বন্ধু-আড্ডার দিনগুলোর জন্য। কেননা বন্ধুরা সব কাছাকাছি থাকলেও ব্যস্ততার জন্য সবাইকে একই সময় পাওয়া যায় না। আর যারা দূরে চলে গেছে তাদের অবস্থা তো আরো করূণ। তাই সিঙ্গেল বন্ধুদের একত্রিত হওয়ার জন্য ভ্যালেন্টাইন ডে টা হতে পারে সেরা উপলক্ষ।
আরও পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
নতুন বা প্রিয় কোন মুভি বা টিভি সিরিজ অথবা কমেডি শো দেখা
পরিবার বা আত্মীয়-স্বজন অথবা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মুভি দেখার সময়টি হতে পারে শ্রেষ্ঠ একটি কোয়ালিটি টাইম। আর ব্যস্ততার জন্য কাউকেই পাওয়া না গেলে নতুন বা প্রিয় কোন মুভি ছেড়ে দিয়ে একা একাই বসে যাওয়া যেতে পারে কফি ভর্তি মগ হাতে নিয়ে। গত কয়েক যুগ ধরে চলচ্চিত্রগুলোর পাশাপাশি টিভি সিরিজগুলো বিভিন্ন ধরনের দর্শকদের চাহিদার ভিত্তিতে কন্টেন্ট তৈরি করে আসছে। সব মুভি বা টিভি সিরিজের পটভূমিতেই রোমান্টিক আবহ থাকে না। আর কমেডি শো হলে ভ্যালেন্টাইনের মত হাজারো সপ্তাহ অকপটেই কাটিয়ে দেয়া যায়। এই মাধ্যমটি বিশেষত অফিস পাড়ার সিঙ্গেলদের জন্য ভ্যালেন্টাইন ডে উদযাপনের সেরা উপায় হতে পারে।
আরও পড়ুন: মুকেশ আম্বানিকে হারিয়ে এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি
পরিবারের সাথে সময় কাটানো
ভ্যালেন্টাইন ডে’কে কেন্দ্র করে বাবা-মা, ভাইবোনদের জন্য গিফ্ট কিনে সেগুলো দেয়ার জন্য ছোট্ট করে মজার একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যেতে পারে বাসার মধ্যেই। এখানে পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ প্রিয় গান গাইতে পারে বা কবিতা আবৃত্তি করতে পারে অথবা শেয়ার করতে পারে নিজের জীবনে প্রিয় কোন মূহুর্ত। বড় পরিবারের ক্ষেত্রে এই আনন্দগুলো আরো বড় হতে পারে। চাচাতো ভাইবোনরা সব একসাথে হয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলা করা, বাড়ি সাজানো, রান্না-বান্না সব মিলিয়ে ক্রিস্টমাস বা ঈদের মতই এক দারুণ সময়ের অবতারণা করা যেতে পারে।
পড়ুন: বিদেশি ভাষা শিক্ষা: যে ভাষাগুলো উন্নত ক্যারিয়ারে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে
নতুন কোন খাবার রান্না করা
যারা রাধতে ভালবাসেন তাদের জন্য ভ্যালেন্টাইন ডে নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার দিন। শুধু পরিবারের লোকদেরই নয়; বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-পড়শি অথবা আত্মীয়-স্বজনদের ডেকে ছোট-খাট একটা পার্টির আয়োজন করে পরিবেশন করা যেতে পারে নিজের সেরা রান্নাটা। তাছাড়া নতুন কোন সময়সাধ্য রান্নার জন্য কাজের পর বাকি পুরো দিনটিই নিজের জন্য রেখে দেয়া যেতে পারে। ভ্যালেন্টাইনের আগের দিনেই পরিকল্পনার করে পরের দিন কাজ শেষে বাসায় ফেরার সময় মনের মত বাজার করে নেয়া যেতে পারে। অতঃপর সন্ধ্যার পর থেকে নিজের বিশাল সাম্রাজ্যটাতে যথারীতি আয়োজন করে শুরু করা যেতে পারে প্রিয় রান্নাটি।
পড়ুন: রাজু ভাস্কর্যের সামনে নৃত্যরত ইরা: সপ্রতিভ উত্থানে এক বাংলাদেশি ব্যালেরিনা
নতুন ব্লগ তৈরি
যারা নিজের কাজটি করতে প্রচন্ড ভালবাসেন তাদের আসল ভ্যালেন্টাইন তো সেই কাজটিই। তাই যে কাজে পারদর্শিতা আছে সেরকম কোন কাজ করে তা রেকর্ড করার জন্য ভ্যালেন্টাইন ডে’টা সেরা। হতে পারে সেটা গিটার বাজানো, গান গাওয়া, রান্না, প্রযুক্তি বিষয়ক কোন ভিডিও, এমনকি ঘুরতে যেয়েও ভ্রমণটাকে ভিডিও করে আনা যেতে পারে। অতঃপর ফুটেজগুলোকে মনের মত করে সম্পাদনা করে আপলোড করা যেতে পারে ইউটিউব ও ফেসবুকে। এটি শুধু তৃপ্তির কাজ-ই করা হবে না; পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ার জন্যও একটি সুদূরপ্রসারি ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: মধু কি সত্যি অমৃত?
সিঙ্গেল নামের স্টেরিওটাইপটি ম্লান হয়ে যেতে পারে বছরের অন্যান্য বিশেষ দিনগুলোর মত ভ্যালেন্টাইন্স ডে’টাও শুরু করলে। মুলত মানসিক প্রশান্তি দিনের ধরনের ওপর নির্ভর করে না। যে কোন অর্জন অথবা নিছক ভালো লাগার উদয় বিশেষায়িত করতে পারে যে কোন সাধারণ দিনকে। শুধু ভ্যালেন্টাইন ডে নয়, এটি যে কোন তথাকথিত বিশেষ দিন এমনকি সপ্তাহের শেষ দিনটির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আরও পড়ুন: ফের বিয়ে করলেন অভিনেত্রী সারিকা