তারা হলেন- শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা নান্টু (৩৫), ঝিকরগাছা উপজেলার কাটাখালি গ্রামের সাহেব আলী (৬০), শহরতলীর ঝুমঝুমপুর মান্দারতলা এলাকার বাসিন্দা ফজলুর রহমান চুক্কি (৫০) এবং শহরের গরীব শাহ রোডের বাসিন্দা মনি বাবু (৪৫), শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের সাবুর (৪৬), বারান্দী মোল্লাপাড়ার আব্দুর রশিদ, সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলার বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান (৪৫), মনিরামপুরে মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা মোমিন (৪২) ও মুক্তার আলী (৪৫)।
কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান জানান, শুক্রবার রাতে শহরের বেজপাড়ার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে নান্টু নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি শহরের মাড়ুয়া মন্দির সংলগ্ন হাসানের মদের দোকানের কর্মচারী। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ স্থানীয় হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
থানার পরিদর্শক সুমন ভক্ত বলেন, নান্টু মাদকসেবী ছিলেন। তিনি প্যাথেডিন ইনজেকশন নিতেন বলে জানতে পেরেছেন। লাশ উদ্ধারের সময় তার ঘরে প্যাথেডিনের খালি অ্যাম্পুল পাওয়া গেছে।
এদিকে শুক্রবার রাতে মাড়ুয়ারি মন্দির সংলগ্ন পতিতালয় এলাকায় অতিরিক্ত মদপানে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে আব্দুর রশিদ নামে এক ব্যক্তিকে পতিতালয়ের সামনের একটি ভবন থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখেছেন। তবে তিনি কী কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তা জানতে পারেননি। অপর একটি সূত্র জানায়, আব্দুর রশিদের বাড়ি বারান্দী মোল্লাপাড়ায়। তিনিও মদের দোকানের কর্মচারী।
শুক্রবার রাতে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ঝিকরগাছা উপজেলার কাটাখালি গ্রামের সাহেব আলী নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সাহেব আলী নিজ বাড়িতে মদপান করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলার বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান নিজ বাড়িতে মদপানের পর মারা যান বলে খবর পাওয়া যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি করে তাকে দাফন করে দেন বলে স্থানীয়রা জানায়।
শুক্রবার বিকালে শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের সাবুর নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবুর মারা যায়। তার পরিবারের সদস্যরা জানায়, অতিরিক্ত মদপানে তিনি অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে শুক্রবার বিকালে মনিরামপুরে মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা মোমিন বিষাক্ত স্পিরিট পানে মারা যান। এর আগে মুক্তার আলী নামে একই গ্রামের আরও এক ব্যক্তি মারা যান।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, মোমিনের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তার পরিবারের দাবি সে অসুস্থ ছিল। আর মুক্তার আলীর মৃত্যুর খবর তার জানা নেই।
এর আগে বৃহস্পতিবার যশোরে ফজলুর রহমান চুক্কি এবং মনি বাবু নামে আরও দুজন অতিরিক্ত মদপানে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া যায়। হাসপাতালের খাতায় তাদের মৃত্যুর কারণ অ্যালকোহলিক বলে উল্লেখ রয়েছে।
মৃত মনি বাবুর স্ত্রী হিরা খাতুন জানান, গত মঙ্গলবার রাতে তার স্বামী মদপান করেন। পরদিন রাতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাথে সাথে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি মারা যান। হাসপাতালের চিকিৎসক আজিজুর রহমান জানান, মদের বিষক্রিয়ার কারণে মনি বাবুর মৃত্যু হয়েছে।
মদপানে নয়জনের মৃত্যুর বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম জানান, যারা ভেজাল মদের কারবার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে দায়িত্ব অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।