ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ঋণ দেয়ার নামে প্রতারণা করে কয়েক শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে‘গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র’নামে একটি এনজিও উধাও হয়ে গেছে। ঋণ গ্রহীতা গ্রাহকরা সোমবার সকালে ঋণ নিতে এসে দেখেন অফিসে তালা ঝুলানো। পরে ভুয়া এনজিও’র খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত ঋণ গ্রহীতারা থানায় অভিযোগ জানান।
ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রায় এক মাস আগে ‘গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র’এনজিও সংস্থার কয়েকজন মাঠ কর্মী ঋণ দেয়ার নামে পৌরশহরসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে প্রচারণা করে। তারা আগ্রহী গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম সঞ্চয় বাবদ ১০, ২০, ৫০ ও ৮০ হাজার টাকা নেয়। সোমবার পৌরশহরের মসজিদ পাড়ার একটি তিনতলা ভবনে অফিস উদ্বোধন করে ঋণ দেয়ার দিন ধার্য করেন। সকালে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা ঋণগ্রহীতারা অফিসে এসে দেখেন তলাবদ্ধ এবং পালিয়ে গেছে ওই এনজিওর কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ভিক্ষুকের টাকা আত্মসাৎ, চট্টগ্রামে কথিত এনজিও কর্মকর্তা আটক
উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের কৃষক শরীফ মিয়ার স্ত্রী শরীফা বেগম জানান, এক লাখ টাকা ঋণ দেয়ার পাশাপাশি স্বামীকে কর্মসংস্থান করে দেয়ার অজুহাত দেখিয়ে সঞ্চয় বাবদ তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। সোমবার ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা ঋণ নিতে এসে দেখেন অফিস ঘরে তালাবন্ধ। কর্মীদের মোবাইল ফোনও বন্ধ করে রেখেছেন।
উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের বীরচন্দ্র পুর গ্রামের কৃষক সাদেক মিয়া জানান, তারা দুই লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে গত দুই দিন আগে আমার কাছ থেকে একটি বইয়ের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা নেয়। সকালে ঋণ নিতে এসে দেখি অফিসে তালা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৪ ডিসেম্বর পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে ‘গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্র’ নামের একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান প্রতারণা ব্যবসা শুরু করে।
ভবনের মালিক দুবাই প্রবাসী আলেক মিয়া। তার স্ত্রী সেতু আক্তার জানায়, চলতি মাসের ৪ তারিখ ভবনের তিন তলার একটি কক্ষ মাসিক ৬ হাজার টাকায় তারা ভাড়া নেয়। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি অফিসটি উদ্বোধন করে আমাদের ভাড়া পরিশোধ করার কথা। আমরা বুঝতে পারিনি তারা এতো বড় প্রতারক।
আরও পড়ুন: গ্রাহকের ৪ কোটি টাকা নিয়ে উধাও এনজিও পরিচালক
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক মো. মিজানুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার জানান, এ ধরনের এনজিও প্রতিষ্ঠানের নাম সরকারি তালিকায় নেই। অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে মানুষের সচেতন হওয়া উচিত।