বাগেরহাট প্রেসক্লাবের এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) এর বাগেরহাটের সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
তিনি দীর্ঘ তিন মাস ধরে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। তার শরীরে নতুন করে আরো দু’টি উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারি করোনা ভাইরাসের প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করার পর থেকে এই সাংবাদিকের শরীরের একের পর এক উপসর্গ দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর ইউএনবি’র বিষ্ণু প্রসাদকে
তাকে প্রথমে বাগেরহাট সদর হাসপাতাল এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে তার চিকিৎসকা করে। কিন্তু বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা তার সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারেননি।
এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তীকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বি এস এম এম ইউতে) ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই দফায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে বৃহত পরিসরে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরাও এখনো সঠিক রোগ নির্ণয় করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে সাংবাদিক নির্যাতন: প্রধান আসামিসহ দুইজন কারাগারে
বিএসএমএমইউ থেকে এক মাসের জন্য ছুটি নিয়ে বর্তমানে বাগেরহাট শহরের শালতলায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
জানা গেছে, সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী ৭ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট সদর হাসপাতালে কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এর দেড় ঘন্টার মধ্যে তার শরীরে উপসর্গ দেখা দেয়। প্রথমে মাথাঘোরা, মাথায় যন্ত্রণা, জ্বর,বুকে ব্যাথা, মেমোরিলস, শ্বাসনিতে কষ্ট,চোখে ঝাপসা দেখা,শরীরে অস্বস্তি, হাত-পায়ে অনুভুতি কম, ঘাড় এবং কোমর ব্যাথা, পায়ের শীরায় টান লাগাসহ বিভিন্ন ধরণের উপসর্গ যুক্ত হতে থাকে। প্রতিদিন একের পর এক উপসর্গ মোকাবেলা করতে হয় তাকে। নতুন করে তার ঘাড়ের রগনালিসহ গলায় ব্যাথা এবং কোমর থেকে দুই পায়ের নিচ পর্যন্ত রগে টানসহ মাঝে মধ্যে শরীরের নিচের অংশ অবশ হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক আনাস মারা গেছেন
একের পর এক উপসর্গ দেখা দেওয়ায় গত ১৬ মার্চ তাকে বাগেরহাট থেকে এয়ার এম্বুলেন্সে যোগে বিএসএমএমইউতে এনে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে দুই দফায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। বি এস এম এম ইউর মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসার ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফতের অধিনে তিনি ভর্তি ছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা তার মাথার সিটিএস্কান, বুকের সিটিএস্কান,ঘাড় ও কোমরের এমআরআই,বোনমেরু, মেরুদন্ডের লালা,এক্সেরে,ইসিজি, আলট্রসোনোগ্রাফি,বোনমেরুস্কান,রক্তসহ শরীরের বিভিন্ন ধরণের অসংখ্য পরীক্ষা করানো হয়। বিএসএমএমইউতে এখনো তিনটি পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। প্রাপ্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা নিদিষ্ট ভাবে তার রোগ নির্ণয় করতে পারেনি।
সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী জানান, তার শারীরিক অসুস্থতা রয়ে গেছে। নতুন করে আরো দু’টি উপসর্গ যুক্ত হয়েছে। প্রতিটি মুহুত্ব আমাকে নানা উপসর্গ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আমার অনুরোধে গত ৫ এপ্রিল বিএসএমএমইউর চিকিৎসকরা আমাকে এক মাসের জন্য রিলিজ দিয়েছে। সেখানে দেওয়া তিনটি টেস্ট রিপোর্ট এখনো পাওয়া যায়নি। ওই টেস্ট রিপোর্ট পওয়ার পর আবারো চিকিৎসার জন্য আমাকে বিএসএমএমইউতে যেতে হবে। শারিরীক অসুস্থতার বিষয় নিয়ে দেশ-বিদেশে চিকিৎসকদের সাথে নানা ভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
চিকিৎসা সহযোগীতায় এগিয়ে আসায় বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক,ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বপন কুমার দাস, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিনসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী।
বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ইউএনবি সম্পাদক মাহফুজুর রহমান,ইউএনবির এক্সিকিউটিব পরিচালক নাহার খানসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপা আর হাজারো মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় আমি বেঁচে আছি। সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।
তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারো পেশাগত কাজে ফিরতে চান।