বেলা ১১টায় সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হকের আদালতে মামলার ৮ আসামিকে হাজির করা হলেও, আসেননি কোনো সাক্ষী।
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ থাকলেও, সেদিনও সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল
বাদীপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান চৌধুরী জানান, গত ২৪ জানুয়ারি আদালতে এ ঘটনায় হওয়া দুটি মামলা একসাথে বিচার কাজ শুরু করার আবেদন করা হয়। বিচারক সেই আবেদন খারিজ করে দেন এবং ২৭ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘একই ঘটনায় হওয়া মামলা পৃথক দুটি আদালতে পরিচালিত হলে সকলকে দুই জায়গায় সাক্ষী দিতে হবে এবং প্রশ্নবিদ্ধ বিচারের সম্ভাবনা দেখা দেবে।’
এদিকে হাইকোর্টের আদেশ দ্রুত নিয়ে আসার জন্য এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে বাদীপক্ষের আইনজীবীকে আদেশ দিয়েছেন বিচারক। এ মামলায় মোট ৫১ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে। বুধবার মামলার বাদীসহ পাঁচজনের সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল।
এমসি কলেজে ধর্ষণ: ৮ আসামির বিচার শুরুর আদেশ
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘বাদীপক্ষ চাচ্ছে দুটি মামলার বিচার একই আদালতে পরিচালনা করতে। কিন্তু এটা আদালত মানেনি। অনুমতি নেয়ার জন্য বাদীপক্ষ হাইকোর্টে যাবেন। তবে ধর্ষণ মামলার বিচার কাজ এই আদালতেই চলবে। এ জন্য বুধবার আদালতে কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।’
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পিপি রাশিদা সাঈদা খানম বলেন, ‘বাদীপক্ষের আইনজীবী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ছিনতাই মামলা একই আদালতে একসাথে বিচার কাজ শুরু করার আবেদন করেন। বিচারক তা খারিজ করলে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। এ জন্য আজও (বুধবার) সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।’
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: অভিযোগ গঠনের শুনানি ১৭ জানুয়ারি
গত ১৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করে বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে আদালত।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আবুল কাশেমের আদালতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া ধর্ষণে সহায়তা করায় অভিযুক্ত করা হয় আসামি রবিউল ও মাহফুজুরকে। ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত ওই আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে ঘটনার পর আসামিদের পালিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন পর্যায় প্রত্যক্ষ করা দুজনসহ ৫১ জনকে সাক্ষী রাখা হয়।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরীর বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণী (২০) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।
এমসি কলেজে ধর্ষণ: ডিএনএ প্রতিবেদনে আসামিদের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে
এ ঘটনায় তার স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর আসামিরা ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে গেলেও তিনদিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব।
গ্রেপ্তারের পর আট আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়।