কক্সবাজার সদরে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এনসিপির স্থানীয় এক নেতাসহ গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আখতার জাবেদের আদালত এ আদেশ দেন বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন, কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকায় বসবাসকারী জাহাঙ্গীর কাশেমের ছেলে রাইয়ান কাশেম, তার বাবার মালিকাধীন আল্লাওয়ালা হ্যাচারির নৈশ প্রহরী মোহাম্মদ হোসাইন ও মোহাম্মদ মিজান।
রাইয়ান কাশেম বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের কক্সবাজারের সমন্বয়ক এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির ( এনসিপি ) স্থানীয় নেতা। তার বাবা জাহাঙ্গীর কাশেম আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, রবিবার মধ্যরাত কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল পুরাতন ব্রিজ সংলগ্ন আল্লাওয়ালা হ্যাচারিতে যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই জড়িত সন্দেহে ৪ জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে রাইয়ান কাশেম নামের একজনকে উত্তেজিত জনতার মারধরে আহত হলে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক না হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ছাড়পত্র দেন। সোমবার রাতে পুলিশ তাকে কক্সবাজার নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক তিনজনকে কক্সবাজারের আদালতে পাঠানো হয়। পরে আদালত শুনানি শেষে তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। ঘটনায় আটক একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জসিম উদ্দিন জানান, ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনো মামলার এজাহার জমা দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নথিভুক্ত করা হবে। তারপরও পু্লিশ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, রবিবার মধ্যরাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের আল্লাওয়ালা নামে একটি হ্যাচারিতে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: গ্রেপ্তারের একদিন পর কারাগারে কয়েদির মৃত্যু
নিহত আলী আকবর কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউনিয়নের কুলিয়াপাড়ার বাসিন্দা আলী আহমদের ছেলে।
নিহতের পরিবারের দাবি, মাছ চুরির অপবাদে আলী আকবরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মূলত জমির বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ খুন করা হয়েছে।
তবে ঘটনায় উত্তেজিত জনতার হামলার শিকারের আগে গণমাধ্যমে এনসিপি নেতা রাইয়ান কাশেম দাবি করেন, তাদের হ্যাচারিতে চুরির সময় আলী আকবরকে হাতেনাতে ধরে নিরাপত্তা প্রহরীরা। পরে আলী আকবর আঘাত করলে আত্মরক্ষার্থে নিরাপত্তা প্রহরীরা পাল্টা আঘাত করে। এতে মারা যান তিনি।