কুড়িগ্রামে বৃষ্টি ও উজানের ঢল কমে আসায় তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতির অনেটাই উন্নতি হয়েছে। তিস্তার পানি গত ২৫ ঘণ্টায় ৩৯ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে নদী অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকার ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও এখনও তলিয়ে আছে শতশত হেক্টর জমির আমন খেত।
এসব এলাকার কৃষকরা জানান, আকস্মিক বন্যায় আমন খেত তলিয়ে থাকায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে চলমান বন্যায় জেলার ৪৩১ হেক্টর জমির আমন খেতসহ অন্যান্য ফসল নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় এসব ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
অন্যদিকে পানি বাড়া-কমার সঙ্গে তীব্র হয়ে উঠছে তিস্তা পাড়ের ভাঙন।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, ব্রহ্মপু্ত্রের ভাঙনে ওই ইউনিয়নের খুদির কুটি গ্রামে তার নিজের বসতভিটাসহ ৬০টি পরিবারের বসতভিটা গত তিন দিনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ওই এলাকার আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয়, দোতলা বিশিষ্ট বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ওই স্থাপনাগুলো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানান, পানি কমার সঙ্গে ভাঙন শুরু হলেও কোনো ব্যবস্থা নেই প্রতিরোধে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তার অববাহিকার আব্দুল মজিদ নামের একজন বলেন, ‘দুই দিনের বন্যায় আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। মরিচের আবাদ তো শেষ। এছাড়াও তিস্তা নদী ভাঙছে। আমরা খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বন্যার পানিতে প্রায় সাড়ে ৪০০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত। এর মধ্যে রোপা আমনের ক্ষতি কম হলেও অন্যান্য ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘এখন সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ভাঙন রোধে জরুরি কাজের অনুমতি না থাকার কারণে কাজ করতে পারছি না। অনুমতি পেলে ভাঙনকবলিত এলাকায় কাজ করা হবে।’