আধিপত্য বিস্তার ও নির্বাচনি বিরোধকে কেন্দ্র করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।
এ সময় তার বাম হাতের একাধিক আঙ্গুল কেটে বিচ্ছিন্ন করে পা ভেঙে দেয়া হয়েছে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরে আইনজীবীসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম
রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত এনামুল হক এনা পুরুলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
অপরদিকে, এ ঘটনার পরপরই প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতা খাইরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা করে আসবাপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় আহত এনা গ্রুপের লোকজন।
এছাড়া বিকাল চারটার দিকে উপজেলার চাঁচুড়ী ইউনিয়নের হাড়িয়ারঘোপ এলাকা থেকে হিমু শেখ (৪০) নামে প্রতিপক্ষের এক যুবক কুপিয়ে আহত করে এনা মেম্বারের ক্যাডার সোহেলের নেতৃত্বে অপর একদল দুর্বৃত্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরুলিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও কালিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এনার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল পুরুলিয়া ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সভাপতি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার তমজিদ শেখ,সহকারী ভূমি কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম ও সাফু শেখের।
গত বছর ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচনে এনার নিকট সাফু শেখ হেরে যাওয়ায় দু’গ্রুপের বিরোধ বড় আকার ধারণ করে। এরই জের ধরে রবিবার দুপুরে যোহরের নামাজ শেষে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন ইউপি সদস্য এনামুল হক এনা। প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতা তমজিদ শেখের বাড়ির কাছাকাছি এলে সাফু শেখ, টিপু শেখ, লেলিন শেখ, জাহাঙ্গীর শেখ, রিপন শেখ, লায়েক শেখ ও সাহিদুল শেখসহ একদল দুর্বৃত্ত তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।
এ সময় তাঁর বাম হাতের আঙ্গুল কেটে বিচ্ছিন্ন করে এবং পা ভেঙ্গে দেয় প্রতিপক্ষরা। ইউপি সদস্য এনার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন আহত ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনার পরপরই প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা খাইরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা করে দামি আসবাপত্র ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় এবং হিমু শেখ (৪০) নামে প্রতিপক্ষের এক যুবক কুপিয়ে আহত করে ইউপি সদস্য এনা গ্রুপের লোকজন।
আহত ইউপি সদস্য এনামুল হক এনার ছোট ভাই আজিজুর ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছে; নৃশংসভাবে কোপানো হয়েছে।
যারা এ কাজ করেছে, তাদের বিচার চাই আমরা।
এ প্রসঙ্গে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ তাসমীম আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার কারণে ইউপি সদস্যের ওপর হামলা হতে পারে।
আহত ব্যক্তিদের পরিবার আইনগত ব্যবস্থা নিতে চাইলে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন।
এছাড়া তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খবর পাওয়ার পর এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে কেন্দ্রের সামনে এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম