খুলনার ডুমুরিয়ারসহ বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ‘অজ্ঞান পার্টি’র আট সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ডুমুরিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ‘অজ্ঞান পার্টির’ ৫৯ সদস্য গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তাররা হলেন- সাতক্ষীরা সদরের ধুলহর বেড়বাড়ি এলাকার মৃত জামাল উদ্দিন গাজীর ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫), একই জেলার পাটকেলঘাটার চৌগাছা গ্রামের মৃত শেখ আলফাজ উদ্দিনের ছেলে শেখ পলাশ আহমেদ (৪৫) ও আশাশুনির রাধারআটি এলাকার সামাদ মিস্ত্রীর ছেলে সুমন মিস্ত্রী (৩০), তালার জেটুয়া গ্রামের মৃত সামেদ আলী আকুঞ্জীর ছেলে জিয়াউর আকুঞ্জি ওরফে জিয়া (৪০), ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া গ্রামের শেখ রুহুল আমিনের ছেলে শেখ আরিফুল ইসলাম (৩৪), যশোর ঝিকরগাছার মধুখালি হাটখোলা এলাকার মৃত গোলাম মণ্ডলের ছেলে রমজান আলী মণ্ডল ওরফে মনা (৫১) ও বেনাপোল পোর্ট থানার কায়েডা এলাকার মৃত বজলু মোড়লের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৬) এবং একই থানার কাগজপুর খেদাপাড়া এলাকার মৃত আজগর আলীর ছেলে বাবুল হোসেন (৩৩)।
মোহাম্মদ মাহবুব হাসান সংবাদ সম্মেলনে জানান, ডুমুরিয়া উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে একটি আন্তঃজেলা অজ্ঞান পার্টি সক্রিয় ছিলো। পরিবারের সদস্যদের অগোচরে প্রতারণা করে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে স্বর্ণালংকারসহ দামি জিনিস লুট করে নিতো।
এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের দুটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এ আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কিছু অলঙ্কার যেমন- তিনটি সোনার রুলি (বালা), চারটি আংটি, একটি চেইন, কিছু রুপার গহনা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, সাতটি মোবাইল ফোন ও কয়েকটি হাতুড়ি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখনো আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদের নিকট থেকে আমরা অনেক তথ্য ও এদের সহযোগীদের নাম ও তাদেরকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া কিছু চোরাই অলংকার, মোবাইল ফোন দোকানে বিক্রি করা হয়েছে, সেগুলো উদ্ধার করা হবে। আবার ওই চোরদের সহয়তাকারী হিসেবে স্থানীয়ভাবে অনেকের নাম উঠে এসেছে। তদন্তের স্বার্থে আর আপনাদের বেশি কিছু জানাতে পারছি না।
ডুমুরিয়া থানা সূত্রে জানা গেছে, অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে গত বছরের ৯ নভেম্বর বিকাল ৩টার দিকে ডুমুরিয়ার খর্নিয়ায় একটি মুদি দোকানের সামনে ডাবের মধ্যে চেতনানাশক প্রয়োগের মাধ্যমে সালাউদ্দিনকে অচেতন করেন এবং নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও এটিএম কার্ড চুরি করে নিয়ে যায়। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ডুমুরিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়।
এছাড়া গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে জাকিরুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের কে বা কারা চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগ করে রাতে ঘরের গ্রিল কেটে মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ডুমুরিয়া থানায় আরও একটি মামলা হয়।
মামলা দু’টির অপরাধের ধরন একই হওয়ায় এদের মধ্যে একটা চক্র কাজ করছে এমন ধারণা নিয়ে মামলা দুটি তদন্তে নামে এবং চক্রটিকে ধরার জন্য অভিযানে নামে পুলিশ।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ কনি মিয়া বলেন, ডুমুরিয়া থানা এলাকাসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক বার অভিযান পরিচালনা করে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত মোট আট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং লুন্ঠিত স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।