চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম মোজাম্মেল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ইমতিয়াজ ওরফে ঠোঁট কাটা মানিক, সাতকানিয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন চৌধুরী, জাহেদ, আবু মোহাম্মদ রাশেদ, তারেক, ফরোখ আহামদ, বশির আহামদ, জিল্লুর রহমান, মো. রফিক এবং জমিস উদ্দিনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছর সাজা: আপিল বিভাগ
এরমধ্যে যুবলীগ নেতা বশির আহমদ, তারেক ও জসিম উদ্দিন পলাতক রয়েছেন। অপর সাতজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে আইয়ুব, হারুনুর রশিদ, মোর্শেদ আলম ও ইদ্রিস নামের দুই আসামিসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দুই ইদ্রিসের মধ্যে ইব্রাহিম মিস্ত্রীর ছেলে ইদ্রিস ও হারুনুর রশিদ কারাগারে আছেন, অন্যরা পলাতক।
অপরদিকে তাহের, খায়ের আহমদ, মোস্তাক ও আব্দুল মালেককে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। এই চার আসামির মধ্যে তিনজন আগ থেকেই পলাতক ছিলেন। তাহের কারাগারে আছেন।
এই মামলার প্রধান আসামি লুৎফর রহমান লুতু মামলা চলাকালেই মারা যান।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে যৌতুকলোভী স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এসইউএম নুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।’
মামলার বাদী নিহত আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা রওশন আক্তার বলেন, ‘স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে ২১ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি আর কিছু চাই না।’
উল্লেখ্য-১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফের সামনে সোনাকানিয়া ইউনিয়নের পর পর দু’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরেরদিন ৪ অক্টোবর নিহতের স্ত্রী সৈয়দা রওশন আকতার বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় ২১ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে একজন আসামিকে বাদ দিয়ে ২০ জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ ২০০০ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বন্ধুর মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন
গত ১১ নভেম্বর এ মামলার যুক্তিতর্ক শেষে উপস্থিত আসামিদের জামিন বাতিল করে সাতকানিয়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন, ইমতিয়াজ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা মানিক, মো. ইদ্রিস, মো. জাহেদ হাসনাইন, আবু মোহাম্মদ রাশেদ হাসনাইন, ফোরখ আহমদ, মো. হারুনর রশিদ, জিল্লুর রহমান, মো. রফিক ও আবু তাহেরকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।
দীর্ঘ প্রায় ২১ বছরের এ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।