পুলিশি বাধা ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৯ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শুক্রবার নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বর থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে হাজার হাজার ছাত্র ও অভিভাবকরা বের হন। মিছিল নিয়ে টেরি বাজার, লালদীঘি পাড়, কোতোয়ালী হয়ে নিউ মার্কেট চত্বরে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা।
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেশব্যাপী প্রার্থনা ও গণমিছিল আজ
সেখানে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘আমাদের ভাইদের হত্যার বিচারসহ ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। হত্যা, গ্রেপ্তার, হামলা ও মামলা দিয়ে এই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। কোনো শিক্ষার্থী আক্রান্ত হলে তার পুরো পরিবারসহ শত শত শিক্ষার্থী আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।’
আন্দোলন ঘিরে আন্দরকিল্লা মোড়সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। পুলিশ প্রথমদিকে মিছিলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও ছাত্রদের মারমুখি অবস্থানের কারণে পিছু হটে। আন্দরকিল্লা মোড়ে পুলিশের সামনে গিয়ে কটূক্তি করে স্লোগান দেয় অনেক শিক্ষার্থীরা। তবে পুলিশ ছিল শান্ত।
বেলা ৩টার দিকে নিউ মার্কেট থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে স্টেশন রোড, বিআরটিসি মোড়, কদমতলী অতিক্রম করে টাইগার পাস মোড়ে গিয়ে সমাবেশ করে। সেখানে আধঘণ্টা ধরে সমাবেশ করে মিছিল নিয়ে নগরীর ওয়াসার মোড়ে গিয়ে কর্মসূচি শেষ করে বিকেল ৪টায়। তবে নগরীর দামাপাড়া পল্টন রোড়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতার বাসার সামনের গলিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগের শতাধিক নেতাকর্মী পুলিশ পাহারায় অবস্থান করতে দেখা গেলেও কোননো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের গণমিছিল
শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও দোয়ার কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। একই সঙ্গে শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন ছাত্রদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করছে দেশব্যাপী।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রামের অন্যতম সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ এর ডাক দেন। তিনি তাদের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, আলেম-ওলামা, শ্রমিক, অভিভাবকসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে হাজারো মানুষ অংশ নেন। মিছিলে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন: ডিবি আমাদের জোর করে আটকে রেখেছিল, আন্দোলন চলবে: মুক্তির পর কোটা আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক