এ ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার হোসেন আলী সরকারের নেতৃত্বে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে ছয় হাজার মণ পাট উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: পাটকল শ্রমিকদের পাওনা নভেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিশোধ হবে: মন্ত্রী
অধিদপ্তর এ সময় ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও জয়নাল আবেদীনের তিনটি গুদাম থেকে উদ্ধার করা পাটগুলো ছয় হাজার ১০০ টাকা মণ দরে আকিজ জুট মিল, মালেক জুট মিল ও নাটোর জুট মিলের কাছে বিক্রি করে দেয়।
পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হোসেন আলী বলেন, ‘মজুদের কারণে জুট মিলগুলো পাট সংকটে উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে পারছে না। এ কারণে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে পাট অধিদপ্তর।’
আরও পড়ুন: খুলনায় পুলিশ ও পাটকল শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১৫
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচাপাট সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে কাঁচাপাটের ডিলার ও আড়তদাররা এক হাজার মণের বেশি কাঁচাপাট এক মাসের বেশি সময় ধরে মজুদ করতে পারবেন না।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ২০ জানুয়ারি সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সাথে আলোচনাকালে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে বকেয়া বেতনের দাবিতে পাটকল শ্রমিকদের মানববন্ধন
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে কাঁচাপাটের সংকট তৈরির কারণে পাটকলগুলো উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ জন্য লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাঁচাপাট ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ হতে বিরত রাখা, ভেজাপাট ক্রয়-বিক্রয় রোধ করা এবং বাজারে কাঁচাপাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাট অধিদপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:পাটকল শ্রমিকরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে জুনের বেতন পাবেন: মন্ত্রী
মন্ত্রী জানান, চলতি পাট মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাট চাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচ বছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না।
অঅরও পড়ুন: খুলনায় পুলিশ ও পাটকল শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১৫
উল্লেখ্য, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৬৬৮.১১ কোটি ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০.৫৬ শতাংশ এবং চলতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৯.২৯ শতাংশ বেশি।