এসব পাটকলের ৩৩ হাজার শ্রমিক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রেখে গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। এ কারণে চার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) সূত্র জানায়, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয় পাটকলে প্রতিদিন পাটজাত পণ্যের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৭২.১৭ মেট্রিক টন। সেখানে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৮৬.৩৯ মেট্রিক টন।
সর্বশেষ ৭ ডিসেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলীম জুট মিলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০.৫০ মেট্রিক টন। সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৩.৬৩ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩৪.৭৯ শতাংশ।
কার্পেটিং জুট মিলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭.৬৮ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ২.৯০ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৩.৭৫ শতাংশ।
ক্রিসেন্ট জুট মিলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭০.৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ২৩.০৬ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩২.৬৫ শতাংশ।
দৌলতপুর জুট মিলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০.১১ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ২.৪৫ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২২.১৬ শতাংশ।
ইস্টার্ন জুট মিলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬.৩৪ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৭.৯৭ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪০.০৯ শতাংশ।
জেজেআইয়ের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২.২০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৮.১৫ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩৩.২৪ শতাংশ।
খালিশপুর জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭.৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ১২.৩০ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২২.৫৮ শতাংশ।
প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০.৫৪ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ১৫.৯৮ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৯.৭২ শতাংশ।
এছাড়া, স্টার জুট মিলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬.৮০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৯.৯৫ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২০.৯৫ শতাংশ।
ওই দিন হেসিয়ান ও স্যাকিংসহ জুট মিলগুলোতে ৮০.২১ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য মজুদ ছিল।
তথ্য অনুযায়ী, ৭ ডিসেম্বরে নয় পাটকলে ১২ হাজার ৫৬৬ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন।
তবে, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা সমস্যা সমাধানে পাটকল শ্রমিক নেতাদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিজেএমসির খুলনা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত লিয়াজোঁ কর্মকর্তা বনিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, ‘উৎপাদন বন্ধ রেখে শ্রমিকদের অনশনের কারণে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি জুট মিলে প্রতিদিন প্রায় এক কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে। গত চার দিনে অনশনের কারণে চার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। শ্রমিকদের এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে লোকসানের পরিমাণ আরও বাড়বে।’
তিনি জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ, ১১ দফা দাবিতে গত ১৭ নভেম্বর ছয় দিনের কর্মসূচির ডাক দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ। ২৫ নভেম্বর থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে ১০ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করে পরিষদ।