বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার এলাকায় বাল্যবিয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিবাহ নিবন্ধক কাজী এবং ছেলে ও মেয়ের দুই অভিভাবককে ছয়মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম নাগেরবাজার এলাকার ওই কাজী অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযান চলাকালে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে ওই তিনজনকে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার এলাকার বিবাহ নিবন্ধক কাজী আতাউল বারী ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বাবা সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কবির সরদার এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের বাবা গোবরদিয়া এলাকার সজিব হাওলাদার।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম জানান, নাগেরবাজার বিবাহ নিবন্ধক কাজী অফিসে বাল্যবিবাহ দেয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, কাজী আতাউল বারী এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৭ বছর বয়সের এক মেয়ে ও ২০ বছর বয়সী এক ছেলের বিয়ে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো বাল্যবিয়ে
তিনি জানান, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ এর আওতায় কাজী আতাউল বারী এবং ছেলে ও মেয়ের ওই দুই অভিভাবককে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিনজনকে এদিন রাতেই বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিচারক আরও জানান, আইন অমান্য করে বিবাহ নিবন্ধক কাজী আতাউল বারী দীর্ঘদিন ধরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েদের বিয়ে দিয়ে আসছেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েদের জন্ম তারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সাদা কাগজে লিপিবদ্ধ করে কাজী তাদের বিবাহ সম্পাদন করেন। পরে কাগপত্র অনুসারে তাদের বয়স পূর্ণ হলে রেজিস্ট্রারভুক্ত করা। অভিযান চলাকালে এমন প্রমাণ মিলেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলামের তথ্য মতে, গত এক বছরে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ না দেয়ার জন্য নানা ভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কেউ আইন অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাট জেলায় বিভিন্ন সময় বাল্যবিবাহ হয়ে আসছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা খবর পেলেই ছুটে গিয়ে বাল্যবিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছেন। এর পরেও থেমে নেই বাল্যবিয়ে।