বাল্যবিয়ে
নড়াইলে বাল্যবিয়ের ভয়ে পলাতক, ২১ দিন পর বান্ধবীর বাড়ি থেকে কিশোরী উদ্ধার
নড়াইলের সদর উপজেলায় বাল্যবিয়ের ভয়ে বাড়ি থেকে পালানোর ২১ দিন পর বান্ধবীর বাড়ি থেকে এক কিশোরীকে (১৭) উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বিকালে তাকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়।
ওই কিশোরী নড়াইল সদরের একটি স্কুল থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ সকালে ওই কিশোরী বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশে বের হয়। এরপরে সে আর বাড়িতে ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সন্ধান না পেয়ে তার মা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরে পুলিশের একাধিক টিম ওই কিশোরীর সন্ধানে অনুসন্ধানের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় ২১ দিন পর ঢাকা মেট্রোপলিটনের কদমতলী থানা এলাকায় পরীক্ষার্থীর অবস্থান শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জান্নাতি নামের এক মেয়ে বান্ধবীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে।
নড়াইল পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ জিডির পরপরই আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল সুস্থভাবে তাকে উদ্ধার করা। জেলা পুলিশের একাধিক টিমের সমন্বিত প্রচেষ্টায় মেয়েটির অবস্থান শনাক্ত করে তাকে সুস্থ উদ্ধার করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, ওই কিশোরীর পরিবার কুয়েত প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করে। তিন্তু সে পড়াশোনা করতে চায়, তাই বিয়ে করবে না বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ওই পরীক্ষার্থীকে তার মা ও ভাইদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া পরিবারকেও সতর্ক করা হয়েছে তাকে যেন বাল্যবিয় না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৯৯৯: জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন, কিশোরী উদ্ধার
মোবাইলে মেসেজে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার, আটক ২
১ বছর আগে
চট্টগ্রামে মাদরাসা ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন এসিল্যান্ড
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ১৫ বছর বয়সী এক মাদরাসা ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড মো. আলাউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার মধ্যম করলডেঙ্গায় অভিযান চালিয়ে এ বিয়ের আয়োজন বন্ধ করেন তিনি।
মেয়েটি স্থানীয় গাউছিয়া তৈয়বিয়া আজিজিয়া সুন্নিয়া মাদরাসায় ৮ম শ্রেণিতে পড়ে।
আরও পড়ুন: বিনা সুদে পাওয়া যাবে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ লোন
মো. আলাউদ্দিন জানান, ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে গিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। বাল্যবিয়ের আয়োজন করায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭-এর ৮ ধারায় মেয়েটির পরিবারকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না মর্মে মেয়ের মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত মেয়েটির অভিভাবকদের বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝানো হয়।
আরও পড়ুন: বাল্যবিবাহ ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জোন্টা ক্লাবের ১৬ দিনের প্রচারণা
১ বছর আগে
বাল্যবিয়ে: বাগেরহাটে কাজী ও ২ অভিভাবকের ৬ মাসের কারাদণ্ড
বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার এলাকায় বাল্যবিয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিবাহ নিবন্ধক কাজী এবং ছেলে ও মেয়ের দুই অভিভাবককে ছয়মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম নাগেরবাজার এলাকার ওই কাজী অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযান চলাকালে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে ওই তিনজনকে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার এলাকার বিবাহ নিবন্ধক কাজী আতাউল বারী ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের বাবা সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের কবির সরদার এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের বাবা গোবরদিয়া এলাকার সজিব হাওলাদার।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম জানান, নাগেরবাজার বিবাহ নিবন্ধক কাজী অফিসে বাল্যবিবাহ দেয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, কাজী আতাউল বারী এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৭ বছর বয়সের এক মেয়ে ও ২০ বছর বয়সী এক ছেলের বিয়ে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো বাল্যবিয়ে
তিনি জানান, বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ২০১৭ এর আওতায় কাজী আতাউল বারী এবং ছেলে ও মেয়ের ওই দুই অভিভাবককে ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তিনজনকে এদিন রাতেই বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিচারক আরও জানান, আইন অমান্য করে বিবাহ নিবন্ধক কাজী আতাউল বারী দীর্ঘদিন ধরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েদের বিয়ে দিয়ে আসছেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে ও মেয়েদের জন্ম তারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সাদা কাগজে লিপিবদ্ধ করে কাজী তাদের বিবাহ সম্পাদন করেন। পরে কাগপত্র অনুসারে তাদের বয়স পূর্ণ হলে রেজিস্ট্রারভুক্ত করা। অভিযান চলাকালে এমন প্রমাণ মিলেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলামের তথ্য মতে, গত এক বছরে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ না দেয়ার জন্য নানা ভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কেউ আইন অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাট জেলায় বিভিন্ন সময় বাল্যবিবাহ হয়ে আসছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা খবর পেলেই ছুটে গিয়ে বাল্যবিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছেন। এর পরেও থেমে নেই বাল্যবিয়ে।
আরও পড়ুন: পাঠ্যক্রমে বাল্যবিয়ের কুফল অন্তর্ভূক্ত করা হবে
বাল্যবিয়ে পড়াতে গিয়ে কাজীর জেল, বরের জরিমানা
২ বছর আগে
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে দিলেন স্কুলশিক্ষিকা
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে নিজের দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের বিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত ২০ মার্চ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ওই কিশোরীর সঙ্গে ছেলের বিয়ে দেন ওই শিক্ষিকা।
এ বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা ওই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে হাতে মেহেদী রং নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে দেখা যায় বাল্যবিয়ের শিকার ওই স্কুলছাত্রীকে।
বিয়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ওই কিশোরী জানায়, ‘গত এক সপ্তাহ আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে সে (ছেলে) আমাদের বাড়িতে আছে। আমি বাড়িতে এসে স্কুলে ক্লাস করছি।’
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাদরাসাছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
অভিযোগের বিষয়ে ওই শিক্ষিকা জানান, তার নিজ বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালো না। বিশেষ করে তার মায়ের খুব শরীর খারাপ। মায়ের ইচ্ছা নাতির বউ দেখার। মূলত মায়ের ইচ্ছা পূরণ করার জন্যই তিনি নিজের ছেলের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘একজন স্কুলশিক্ষিকার এ ধরনের অপরাধ কাম্য নয়।’
বিয়ের কাজি মফিজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিয়ে তিনি পড়াননি। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’
বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘বেগমপুর ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ বদ্ধপরিকর। একজন স্কুল শিক্ষিকা কিভাবে এই ধরনের কাজ করতে পারে আমার বুঝে আসে না।’
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় বখাটের উত্ত্যক্তের জেরে মাদরাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা!
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তার (ওই শিক্ষিকা) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে পারিবারিক আদালতে মামলা করতে হবে। আর এই বিষয়টি আমাদের দেখার দায়িত্ব না।’
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম ভুইয়া বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে ঘটনার সত্যতা পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২ বছর আগে
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৯ সাংবাদিক
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনের মাধ্যমে অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ ৯ জন সাংবাদিককে ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস প্রকল্পের আওতায় এই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করা হয়। রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে অবস্থিত সুইডেন দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একটি দেশকে যথাযথভাবে উন্নত করতে হলে জোর দিতে হবে সামাজিক উন্নয়নের দিকেও। বাল্যবিয়ে এই পথে অন্যতম প্রধান অন্তরায়। বাংলাদেশকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে বাংলাদেশ সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। অনেকটা পথ এগোলেও করোনা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে নতুন চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, সমাজের চিন্তাচেতনা সহসা পরিবর্তন সম্ভব নয়। তবে পরিবর্তন আসছে, সবাই এর বিরুদ্ধে কথা বলছি। কিন্তু মূল কারণের সমাধান না হলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো না। আর এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
আরও পড়ুন: ব্রাক অভিবাসন মিডিয়া পুরস্কার পেলেন ১৭ সাংবাদিক
সাংস্কৃতিক কর্মী শাহনাজ খুশি বলেন, মেয়েরাই এখন নিজেদের অধিকার নিশ্চিতে সচেতন। তারা নিজেরাই এখন পারছে নিজেদের বাল্যবিয়ে রুখে দিতে। গণমাধ্যম ও সংস্কৃতির এখানে আরও জোরালো ভূমিকা রয়েছে।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের পরিচালক (গার্লস রাইটস) কাশফিয়া ফিরোজ জানান, আমরা সারাদেশে জরিপ চালিয়ে দেখেছি, অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৩৫ শতাংশের মতে যৌন হয়রানির ভয় বাল্যবিয়ের অন্যতম মূল কারণ। ২৫ দশমিক ৬ শতাংশের মতে সামাজিক বিভাজন জনিত উদ্বেগের কারণে বাবা-মা মেয়েদের অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন।
এই ভয় দূর করতে হবে। বিয়ে যে সমাধান নয়, এই বার্তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে পারে গণমাধ্যম, বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সরকার, সুশীল সমাজ, উন্নয়ন সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছে। মেয়েদের শিক্ষা নিশ্চিতে সরকারি অনেক উদ্যোগ রয়েছে। অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন করে তোলা, তাদের ক্ষমতায়ন করা জরুরি যেন তারা অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে না দেয়, মেয়েদের কোনভাবেই বোঝা না মনে করে এবং মেয়েদের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। আর এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যম কাজ করে আসছে।
সাংবাদিক জ ই মামুন জানান, বাবা-মায়ের অনেকের ধারণা বিয়ে সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। এই অনিশ্চয়তা থেকে বাবা-মা’দের মুক্ত করতে হবে। রাষ্ট্রসহ সবাইকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন হেড অব সেন্ট্রাল অ্যান্ড নর্দান রিজিওন আশিক বিল্লাহ ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম চৌধুরী।
পুরস্কার পেলেন যারা
আঞ্চলিক বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন জহিরুল ইসলাম (এস এ টিভি), শাকিল মুরাদ (একাত্তর টিভি), সফি খান (প্রথম আলো) ও মাসুদুর রহমান (আজকের পত্রিকা)। জাতীয় বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন শাহেদ শফিক (বাংলা ট্রিবিউন), নীলিমা জাহান (দ্য ডেইলি স্টার), সাজ্জাদ পারভেজ (যমুনা টিভি), নাজনীন আখতার (প্রথম আলো) ও জাহাঙ্গীর আলম (জাগো নিউজ ২৪)।
আরও পড়ুন: চার সাংবাদিক পেলেন অ্যাকশন এইড ইয়াং জার্নালিস্ট মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড
বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস (বিবএফজি) প্রকল্পটি কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলা, ৩টি পৌরসভা, ৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদে কাজ করছে। ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে বাল্যবিবাহের সংখ্যা ১৮ বছরের নিচে এক–তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনা এবং ১৫ বছরের নিচে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
বাল্যবিবাহ কমিটি শক্তিশালী প্রকল্পটি ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। প্রতি মাসে কতসংখ্যক বাল্যবিবাহ হচ্ছে—তার তথ্য সংগ্রহ করে। ঘটক, কাজিসহ বিয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিহ্নিত করে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা গেলে বাল্যবিবাহ কমিয়ে আনা সম্ভব। কুড়িগ্রাম জেলায় বিয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয় হাজার ১২ জন ব্যক্তির তালিকা তৈরি এবং তাদের প্রশিক্ষণ আওতায় নিয়ে আসে এই প্রকল্পটি।
২ বছর আগে
পাঠ্যক্রমে বাল্যবিয়ের কুফল অন্তর্ভূক্ত করা হবে
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, বাল্যবিয়ে রোধে স্কুলের পাঠ্যক্রমে বিষয়টি তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়; যাতে বাল্যবিয়ে না দেয়ার সুফল বাচ্চাদের সুন্দরভাবে বোঝানো যায়।
সোমবার সকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাট হ্যালিপ্যাড মাঠে রাজারহাট উপজেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত ঘোষণা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় (ভার্চুয়ালি) এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, সরকার জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ১০৯ ও ৯৯৯ চালু করেছে। এই সংখ্যাটি আবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের সকল বইয়ের পেছনে প্রিন্ট করে দেয়া হয়েছে। যেন যেখানে বাল্যবিয়ে অথবা নারী নির্যাতন হবে তা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যায়। এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে,বাংলাদেশের মেয়েরা এখন নিজেরা নিজেদের বিয়ে বন্ধ করছে এবং এ জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক অক্ষুণ্ন থাকবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাল্যবিয়ে সমাজের অভিশাপ। এটি নারীর বিকাশ ও স্বাবলম্বী হবার বড় একটি বাধা; যা দেশের অগ্রগতির অন্তরায়। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে কোনো দেশের সত্যিকার উন্নয়ন সম্ভব না। তাই সরকার সমাজকে বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে সরকারের বিরামহীন প্রয়াস অব্যাহত আছে।কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সাবেক প্রতিমন্ত্রী আফসার উদ্দিন খান মারা গেছেন
তিস্তায় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
৩ বছর আগে
বাল্যবিয়ে পড়াতে গিয়ে কাজীর জেল, বরের জরিমানা
সব ঠিকঠাক। একটু পরেই কবুল বলে পড়ানো হবে বিয়ে। তাই মাথায় টুপি আর গায়ে শেরওয়ানি পড়ে বিয়ের আসরে উপস্থিত বর মো. রুবেল হোসেন (২১)। কনে (পাত্রী) বৃষ্টি আক্তারকেও বিয়ের সাজে সাজিয়ে বসানো হয়েছে বরের পাশে। বিয়ের কাজী রেহান রেজাও সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বিয়ে পড়ানোর প্রহর গুনছেন।
কিন্তু কনে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এ খবর পেয়ে আর দেরি করেননি স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। হঠাৎ করেই বিয়ে বাড়ির আসরে মেহমান হিসেবে পুলিশ নিয়ে হাজির হয়ে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার।
আটক করেন কাজীকে। বাল্যবিয়ে পড়ানো ও নিকাহনামা রেজিষ্ট্রেশন করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কাজীকে দেয়া ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ। আর পাত্র রুবেলকে দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটাশন গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
দণ্ডপ্রাপ্ত নিকাহ্ রেজিস্ট্রার (কাজী) রেহান রেজা (৪৭) উপজেলার চেংমারী গ্রামের হুমাউন রেজার ছেলে। তিনি খানপুর ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজি হিসেবে কাজ করেন।
আরও পড়ুন: বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সাহসিকতা সম্মাননা পেল কুড়িগ্রামের ৭ কিশোরী
অন্যদিকে পাত্র রুবেল পাশের নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের সেকেন্দার আলীর ছেলে।
উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটাশন এলাকায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন চলছিল। এমন খবরে থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন ইউএনও। বিয়ের জন্য নিকাহ্ রেজিস্ট্রারে লেখাও প্রায় শেষ পর্যায়ে। এসময় ইউএনওর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে। আর বরের পাশে কনে সেজে মেয়ের ভাবি বসে পড়ে। বিষয়টি ইউএনও’র সন্দেহ হলে তখনই তাদের আটক করে বিভিন্ন অপরাধে সাজা ও জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া বৃষ্টি আক্তার নামে এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হচ্ছে এমন খবরে পেয়ে বিয়ে বাড়িতে যাই। এসময় পাত্র রুবেল হোসেনকে দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আর নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজী রেহান রেজাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। ওই ছাত্রীর ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দেয়া যাবে না শর্তে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা
বাগেরহাটে দেড় বছরে ৩১৭৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে
৩ বছর আগে
বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সাহসিকতা সম্মাননা পেল কুড়িগ্রামের ৭ কিশোরী
নিজেদের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সাহসিকতা সম্মাননা পেয়েছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর সাত কিশোরী। করোনাকালীন সময়ে নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই ঠেকানোয় সাহসী এই সাত কিশোরীকে সম্মাননা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে জাতীয় যুব দিবসের একটি অনুষ্ঠানে মেয়ে শিশুদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এ সম্মাননাসহ শিক্ষা উপকরণ, নগদ অর্থ ও মনীষীদের বই উপহার দেয়া হয়।
উপজেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য জাকিয়া সুলতানা বুবলীর অর্থায়নে এবং সিডা ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আর্থিক ও কারিগরী সহযোগিতায়, আরডিআরএস বাংলাদেশ বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস (বিবিএফজি) প্রজেক্টের সার্বিক সহযোগিতা করে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা
সম্মানপ্রাপ্ত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতী খাতুন, উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের হাউসেরহাট গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে। বাবা পেশায় একজন কৃষি শ্রমিক। অল্প বয়সে বিয়ে করার মোটেও ইচ্ছে নেই তার।
স্বপ্ন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু দারিদ্রতা তাদের প্রতিকূল অবস্থানে থাকায় তার সে স্বপ্ন ভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক সময় বাবা মায়ের বাধ্যবাধকতায় বিয়েও ঠিক হয় তার। পাত্রপক্ষও সেজেগুজে চলে আসেন বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে। কিন্তু অনড় জান্নাতী। এত কম বয়সে কোনোমতেই বিয়ে করবে না সে। বিয়ের পিড়িতে বসে বধূ সেজে নিজেকে সাময়িক রঙিন করার থেকে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে জীবনকে রঙিন করতে চায় এ কিশোরী।
এমন স্বপ্ন জান্নাতীসহ আরও ৬ কিশোরীর। তারাও ঠেকিয়েছে নিজের বাল্যবিয়ে। এদের কেউ দশম শ্রেণিতে কেউ নবম শ্রেণিতে, আবার কেউ দেবে এসএসসি পরীক্ষা। তবে কারোরই ইচ্ছে নেই বিয়ের পিঁড়িতে বসার। তাদের প্রত্যেকেই প্রতিষ্ঠত হতে চায় নিজ নিজ যোগ্যতায়।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে দেড় বছরে ৩১৭৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাছুম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনা বেগম, যুব উন্নয়ন অফিসার মনজুর আলম, বিবিএফজি প্রজেক্টের উপজেলা সমন্বয়কারী রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এ ব্যাপারে জাকিয়া সুলতানা বুবলী বলেন, যাতে কিশোরী মেয়েরা পরিবারে, সমাজে ও প্রতিষ্ঠানে সুরক্ষিত থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে এবং নিজেদের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে উৎসাহী হয় সেদিকটা বিবেচনা করে তাদেরকে এ উপহার দেয়া হয়েছে।
৩ বছর আগে
কুড়িগ্রামে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সংবর্ধনা পেলো মোনালিসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে করোনাকালীন সময় যখন বাল্যবিয়ের হিড়িক ঠিক তখনই বড়লই উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোছা. মোনালিসা আক্তার নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই প্রতিরোধ করেছিল। মোনালিসা অজপাড়া গাঁয়ের মেয়ে হয়েও নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এলাকায়। তার এই সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবে তাকে সংবর্ধিত করল উপজেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ফুলবাড়ী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের হলরুমে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে এক বিদ্যালয়ে ৮৫ শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে!
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাশ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার।এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে মোনালিসাকে প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা প্রদান করার কথা বলেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আ'লীগের সভাপতি আতাউর রহমান শেখ, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব কুমার রায়, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান, জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার, বড়লই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহানী আঙ্গুর, ভাঙ্গামোড় দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: করোনা: কুড়িগ্রামে ঝরে পড়েছে ৫০ হাজার শিশু, বাল্যবিয়ের শিকার বালিকারা
৩ বছর আগে
বাগেরহাটে দেড় বছরে ৩১৭৮ জন শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে
বাগেরহাটে গত দেড় বছরে তিন সহস্রাধিক অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। বাল্যবিয়ের শিকার এসব কিশোরী মেয়েরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তারা পড়ালেখা বন্ধ করে এখন স্বামীর সংসার করছে। এদিকে, বাল্যবিবাহ রোধ করতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন হওয়া জরুরি বলে জেলা প্রশাসক মনে করছে।
শিক্ষা বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলায় করোনাকালীন সময়ে তিন হাজার ১৭৮ জন শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সময়ে প্রায় ৪০০ বাল্যবিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, অপরিণত বয়সে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের সময় অনেক মা ও শিশু মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ে।
করোনাকালে বাল্যবিয়ের শিকার নীলাঞ্জনা (ছদ্মনাম) বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি রহমানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। গত বছর নভেম্বর মাসে তার বিয়ে হয়। অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা এবং লেখাপড়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে মা-বাবা সিদ্ধান্ত নিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে সে ওই বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা পেশায় একজন হকার।
বিয়ের তিন মাসের মধ্যে স্বামীকে ডিভোর্স দেয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী নীলাঞ্জনা জানায়, বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তার মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরিবারে অভাব অনটন মা-বাবাকে ভাবিয়ে তোলে। পরিবারের সিদ্ধান্তে সে বিয়েতে রাজি হয়। বিয়ের পর সে স্বামীর সংসারে চলে যায়। কিছুদিন পর স্বামী তার উপর নির্যাতন চালাতে থাকে। নির্যাতন সইতে না পেরে সে বাবার বাড়ি চলে আসে। বিয়ের তিন মাসের মধ্যে সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছে। এখন সে আবারও পড়ালেখা করতে চায়। পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় নীলাঞ্জনা।
পড়ুন: বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সাংসদদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: স্পিকার
৩ বছর আগে