চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিভাগীয় কমিশনারের গঠিত তদন্ত কমিটি। অগ্নিকাণ্ডের জন্য ডিপো মালিক ও সরকারি তদারকি সংস্থাকে দায়ী করেছে তদন্ত কমিটি।
বুধবার দুপুরে অগ্নিকাণ্ডের এক মাস দুই দিন পর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমান চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিপোতে থাকা কন্টেইনার ভর্তি রাসায়নিক হাইড্রোজেন পারক্সাইড থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ডিপোতে হাইড্রোজেন পারক্সাইড ধারণকারী কন্টেইনারে জাতিসংঘের (ইউএন) সার্টিফিকেট ছিল না।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণের ৩২ দিন পর বিএম ডিপোতে মিলল পোড়া হাড়গোড়
মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট ২০ দফা সুপারিশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার জন্য হাইড্রোজেন পার অক্সাইড কন্টেইনার ভর্তির পর দীর্ঘদিন রেখে দেয়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রায় ২৬টি কন্টেইনারের মধ্য থেকে কয়েকটি ৪০দিন ধরে ডিপোতে পড়েছিল। এসব কন্টেইনার রপ্তানির জন্য স্টাফিং করার পরও চার দফা শিপমেন্ট পিছিয়েছিল শিপিং এজেন্ট।
ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান, দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশসহ তিনটি বিষয়ের ওপর প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
পুরো তদন্তে বিএম ডিপোর পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ২৪ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। এছাড়া বিএম ডিপোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ও পরিচালক মজিবুর রহমানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান মিজানুর।
তিনি বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, শ্রম বিভাগ ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার বিস্ফোরণে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়
এছাড়া ঢাকার অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), চট্টগ্রামের পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে বিভিন্ন রাসায়নিকের ১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এসব পরীক্ষার প্রতিবেদনও তদন্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এক মাস পর বুধবার সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপো থেকে আরেকটি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।গত ৪ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও পরবর্তী বিস্ফোরণে ৫১ জন নিহত ও ২০০ জনের বেশি আহত হয়।