ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় মার্কেট নির্মাণ করতে পুকুর ভরাট করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। গত দুই মাস ধরে ট্রাক্টরে মাটি ফেলে ভরাট কাজ চললেও উপজেলা প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদক জানতে পারেন, বিজয়নগরের চান্দুরা-আখাউড়া সড়কের উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের মির্জাপুর মোড়ে রাস্তা সংলগ্ন পূর্বদিকে প্রায় ৪০-৫০ বছর পুরনো একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরের পূর্বদিকের জলফু মিয়া, আজিজুল হক ওরফে মলাই মিয়া ও করিম মিয়াসহ স্থানীয়রা ৭২শতক পরিমাণের এই পুকুরের মালিক।

উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক থেকে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার দূরত্বে এই পুকুরটির অবস্থান। এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে যাতায়াত করতে হয়। গত ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস আগে মাটি দিয়ে ভরাট করতেই পুকুরের পানি সেচ দিয়ে সরানো হয়।

পরে জলফু, মলাই ও করিমসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি এনে পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করেন। ভরাটকারীরা অনুমতির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত আবেদনও করেছেন।

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে নদীর গতিপথ বন্ধ করে বালু ভরাট, হুমকিতে হাট-বাজার

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশিনার (ভূমি) প্রতিদিন পুকুরের সামনে দিয়ে যাতায়াত করেন। তারা কোনো কিছু বলছেন না। তারা নীরব। তারা বলেন, ভরাটকারীরা সবাই তাদের নিজের মানুষ।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে মাটি ফেলার সময় ট্রাক্টরের চাবি নিয়ে যাওয়ার পর ওয়াদুদ (এএসআই) নামে থানার এক দারোগাকে ৩০ হাজার টাকা দিছি। প্রেসক্লাবের এক সাংবাদিককে ৩০ হাজার ও উপজেলা প্রশাসনকে ৯০ হাজার টাকা দিছি। প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবাদিক সবাইরে ম্যানেজ কইরাই এটা ভরাট করতেছি।’

পুকুরের মালিক আজিজুল হক ওরফে মলাই মিয়া বলেন, ‘ম্যাডামরে (ইউএনও) কাছে সব কাগজপত্র জমা আছে। সব দিছি। জায়গাটি ২০০০ সালে আমরা কিনছি। এইডা পুকুর না, জলাশয়। এখানে জায়গা আছে ৭২শতক।’

ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল হক বলেন, ‘এটি ৪০ বছর ধরে পুকুর হিসেবে দেখতেছি। ভরাট বন্ধের জন্য বলেছি। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কেও জানিয়েছি।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদি হাসান খান বলেন, ‘অভিযোগ আসার পর ভরাট বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া আফরোজ বলেন, ‘আমার কাছ থেকে ভরাটের কেউ কোনো অনুমতি নেয়নি।’

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে নদী ভরাট ও চর দখল করে চলছে ধান চাষ

কক্সবাজারে ৩ ফসলি জমি ভরাট, বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ