গ্রেপ্তার মাওলানা সিরাজুল ইসলাম (৫০) উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আবুল উলায়া খানকা শরিফের প্রধান পরিচালক ও সেখানকার মসজিদের ইমাম।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নবীনগর থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী দুই মাস আগে খানকা শরিফে তার শিশুকন্যার জন্য তাবিজ আনতে গেলে দরজা বন্ধ করে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ও লেভেল শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’: মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ১
সেই সাথে তিনি ওই নারীকে হুমকি দেন যে এ বিষয়ে কাউকে কিছু বললে কিংবা অভিযোগ করলে তাকে ও তার শিশুকে ‘কুফরির মাধ্যমে বান মেরে’ হত্যা করা হবে। এ ভয়ে ধর্ষণের বিষয়টি এত দিন গোপন রাখেন ওই নারী।
কিন্তু ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে স্বামীর বাড়ির লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে যায়। স্থানীয় সর্দাররা বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য নবীনগর পৌর এলাকার ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে পুলিশ খবর পেয়ে সিরাজুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ বলেন, ‘আসামিকে মামলার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে গত ১৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ পাস হয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীকে ‘ধর্ষণের পর হত্যার’ অভিযোগ
সুনামগঞ্জে চলন্ত বাসে ধর্ষণ চেষ্টা: প্রধান আসামি ৩ দিনের রিমান্ডে
নারায়ণগঞ্জে কিশোরী ধর্ষণের দায়ে মুয়াজ্জিন গ্রেপ্তার
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০-এর ৯ (১) ধারা অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এখন ওই ধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে।
এর আগে, দেশে সম্প্রতি ধর্ষণের ক্রমবর্ধমান ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদের অধিবেশন না থাকায় গত ১৩ অক্টোবর ঘৃণ্য এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে এ সংক্রান্ত আইনের (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন) একটি সংশোধনী প্রস্তাব অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়েছিল।
বিশেষ করে সিলেট এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন এবং ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার দাবির মধ্যেই সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছিল।