শনিবার ধুবড়ি আদালত এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বাংলাদেশ-ভারত বর্ডার ভিকটিম রেসকিউ কমিটির আহ্বায়ক এসএম আব্রাহাম লিংকন।
তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গৌহাটিস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার তানভীর মনসুর এবং ধুবড়ি আদালতের আইনজীবী ও আসাম টিউবিনের সম্পাদক রাজর্ষী দাসগুপ্ত আদালতের আদেশের বিষয়টি তাকে নিশ্চিত করেছেন।
মুক্তির আদেশপ্রাপ্ত ২৫ বাংলাদেশির সবাই কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্যাপারীপাড়া গ্রামের অধিবাসী।
এসএম আব্রাহাম লিংকন আরও জানান, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে ভারত সরকারের প্রসিকিউশন মামলাটি কলঅফ করার সম্মতি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে সকল পক্ষের আইনজীবীদের শুনানির পর ধুবড়ি আদালতের বিচারক জেলহাজতে আটক ২৫ জন বাংলাদেশিকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি এবং মামলাটি নথিজাত করার আদেশ দেন। এর মধ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার হলো। এখন অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে তারা দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত ৩ মে দেশে ফেরার সময় ভ্রমণ ভিসা নিয়ে ভারতে যাওয়া ২৬ বাংলাদেশিকে আটক করে ভারতের ধুবড়ি পুলিশ। এদের একজন ভারতে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময় কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের ২৬ বাংলাদেশি ভারতে যান। বৈধ পাসপোর্ট ও ভ্রমণ ভিসা থাকলেও ভারতে দ্বিতীয় ধাপের লকডাউন চলার মধ্যে গত ২ মে ওই ২৬ জন বাংলাদেশি দু'টি মিনিবাসে আসামের জোরহাট জেলা থেকে দেশে ফেরার উদ্দেশে রওনা দেন। পশ্চিমবঙ্গের চেংরাবান্ধা চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা ছিল তাদের। ভারতে জেলে ও খামারকর্মী হিসেবে কাজ করা এসব বাংলাদেশিকে পরদিন (৩ মে) সকালে বাহালপুর এলাকা থেকে আটক করে আসামের ধুবড়ি জেলা পুলিশ। করোনা পরীক্ষার পর তাদের পাঠানো হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে।
গত ৫ মে ওই ২৬ বাংলাদেশির বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং ফরেনার্স (সংশোধিত) অ্যাক্ট, ২০০৪ এবং পাসপোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৬৭’র ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দেশটির পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাসপোর্টধারী এসব বাংলাদেশি টি-ওয়ান ভিসা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এই ভিসাধারীদের কাজের অনুমতি না থাকলেও আসাম পুলিশের অভিযোগ, এই বাংলাদেশিরা রাজ্যের জোরহাট, গোলাঘাট ও শিবসাগর এলাকায় কর্মসংস্থান কার্যক্রমে যুক্ত থেকে ভিসার শর্ত ভঙ্গ করেছেন। এর মধ্যে গত ১ জুলাই কারা হেফাজতে বকুল মিয়া নামে এক বাংলাদেশি মারা গেলে চারদিন পর তার লাশ স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানো হয়।