প্রতিদিন নানা কাজে প্রতিনিয়ত এলাকাবাসীকে দুই’শ গজ সড়কে হাটু পানি ও দুই কিলোমিটার রাস্তায় ভয়াবহ কাদা মাড়িয়ে উপজেলা শহরের যেতে হচ্ছে। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার চরপাচুড়িয়া গ্রামের মধুমতি নদীর পাশ দিয়ে চলে গেছে এই সড়কটি।
এই সড়ক দিয়ে চড়পাচুড়িয়া গ্রাম ও চর পাচুড়িয়াসহ ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলার চরনারানদিয়া, রায়পাশা ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন।
বিকল্প কোনও সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ১০ হাজার মানুষকে নিরুপায় হয়ে এই পথ দিয়ে চলতে হয়। সড়কটি সংস্কার বা পাকাকরণ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
এলাবাসীর অভিযোগ, মহম্মদপুর উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এ গ্রামটির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশী ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারি উপজেলার সাথে বিরোধ ছিল। প্রায় দুই বছর আগে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
সীমানা বিরোধের কারণে এখানে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা যায়নি। প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনসংখ্যা অধ্যুষিত মধুমতি নদী পাড়ের চর পাচুড়িয়া গ্রামটিতে নূন্যতম কোনো নাগরিক সুবিধা নেই।
উপজেলা সদরে বাস করে চরম অবহেলিত এই গ্রাম। এ যেন বাতির নিচে অন্ধকার। উপজেলা শহরের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য। এলাকাবাসীরা জানান, নানা কাজে উপজেলা শহরে যেতে হয় পানি ও কাদা মাড়িয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরল ইসলাম বলেন, গ্রামে বিদ্যুৎ ছিল না, কিছু অংশে বিদ্যুৎ আসলেও রাস্তাঘাটের কোনও উন্নয়ন হয়নি।
এ দিকে, এই অবস্থার সাথে যোগ হয়েছে মধুমতির ভাঙন। ভাঙনে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।
মহম্মদপুর উপজেলা সদরের একটি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী অরিন ও সুমি জানান, স্কুল, কলেজ, অফিস সব মহম্মদপুর উপজেলা সদরে। কোমর পানিতে কাপড় ভিজিয়ে যাতায়াত করতে হয়। গায়ের কাপড় গায়েই শুকাতে হয়।
আরশাদ মোল্যা নামে অপর এক ব্যক্তি জানান, রাস্তাঘাট নেই বলে এই গ্রামে কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না। আত্মীয় স্বজন বিপদে না পড়লে বেড়াতে আসেন না। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিতে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। ঘাড়ে করে হাসপাতালে নিতে হয় রোগীকে। রাস্তা না থাকায় কোনও যানবাহন চলে না।
আরও পড়ুন: যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে, বন্যার আশঙ্কা
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল জানান, সদর ইউনিয়নের এক নম্বর মৌজায় চর পাচুড়িয়া গ্রাম অবস্থিত। দীর্ঘ দিন ধরে সীমানা বিরোধ থাকায় এখানে উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া যায়নি। এবার সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর এসএ রেকর্ড সম্পন্ন হয়েছে। এখন উন্নয়নে প্রকল্প নিতে আর বাঁধা নেই। সম্প্রতি বালীভর্তি বস্তা ফেলে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চর পাচুড়িয়াবাসীর সমস্যা সমাধানে দ্রুত সম্ভব অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।