বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নদীতে পানি বাড়ার কারণে আগাম ফসল আবারও ক্ষতির মুখে পড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে জেলার কৃষকরা।
গত ২/৩দিনে ধরে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়ে চরাঞ্চল ও নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পদ্মা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়েও ২/৩ ফুট বেড়ে গিয়ে জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার চরাঞ্চল ও নিন্মাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
নড়িয়া ইশ্বরকাঠি গ্রামের কৃষক জলিল বলেন, কিছুদিন আগে বন্যার পানি চলে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাই। এরপর ধার-দেনা করে জমিতে শাক-সবজি, আমন, মরিচ ও মাসকলাই রোপন করি। হঠাৎ করে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে আগাম ফসল আবারও ক্ষতির মুখে পড়েছে। এখন বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে কীভাবে বাঁচবো চিন্তা করে কুল পাই না।
শরীয়তপুর কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বর্ষা মৌসুমে বন্যায় জেলার ১৯ হাজার ৭৬৯ জন চাষির ৮৮২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, রোপা আমন, আউশ, বোনা আমন, পাট, শাকসবজি, আখ, পান ও ফলবাগান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে প্রায় ১২ কোটি ১৮ লাখ ৬০ হাজার টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ফের বন্যার পানিতে আমন, শাকসবজি, মাসকলাই ও চারা মরিচের জমি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ পানিতে ২/৩ দিন তলিয়ে থাকায় নতুন করে চাষাবাদ করা সব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।
বার বার ক্ষতির মুখে পড়ায় শরীয়তপুরের কৃষকেরা দিশেহারা। তাদের পরিবারের ব্যয়ভার নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফসলের আবাদ করেছেন। অনাবৃষ্টি ও বন্যার পানিতে বার বার ফসলহানির এ ক্ষতি পোষিয়ে ওঠার সাধ্য নেই তাদের। পাশাপাশি, জেলার তরকারি ও শাকসবজির অভাব দেখা দেবে বলেও আশঙ্কা তাদের।
এ ব্যাপারে জাজিরার কৃষক নুরুল আমিন বলেন, ‘বার বার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা আমাদের জন্য কষ্টকর। কয়েকদিন আগে বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। আবার নুতন করে ফসল করেছি। এখন আবার পানি বেড়ে গিয়ে জমি প্লাবিত হয়েছে।এখন মহা মসিবতে পড়েছি।’
নড়িয়া এলাকার কৃষক কবির চোকদার বলেন, ‘ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ফসল করছি। আরেক দিকে অনাবৃষ্টি ও বন্যায় নষ্ট হয়ে যায়। এখন আমরা কি করবো। আমরা দিশেহারা।’
নড়িয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, কয়েকদিন আগে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পুনরায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। ২/৩দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।