সাতক্ষীরায় করোনার ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আগামী ৫ জুন শনিবার ভোর ৬টা থেকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলায় লকডাউন চলাকালীন সময়ে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কাঁচাবাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা থাকবে। তবে দূরপাল্লার সকল যাত্রীবাহী বাস এবং জেলার অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল, নছিমন-করিমন সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিসেবা লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। সকল ব্যাংক খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় ৭ দিনের লকডাউন
এছাড়া সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চালু থাকবে। তবে বন্দরের সবধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। স্থলবন্দর এলাকায় ভারতীয় ট্রাক-চালক, হেলপারসহ সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি না মানলে জরিমানা করা হবে। মাস্ক না পরলে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করা হবে।
আরও পড়ুন: করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট: সীমান্তবর্তী হওয়ায় ঝুঁকিতে খুলনা বিভাগ
জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, সাতক্ষীরায় বর্তমানে করোনা সংক্রমণের হার ৫৩ শতাংশ। দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা সদর, কালিগঞ্জ ও কলারোয়া উপজেলায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঘরে ঘরে মানুষের জ্বর, সর্দিসহ করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ফলে জেলাব্যাপী লকডাউন ঘোষণা ছাড়া এটি নিয়ন্ত্রল করা কোনভাবেই সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আগামী ১২ জুন জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সভায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত বলেন, করোনা সংক্রমণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় আগামী শনিবার থেকে সাত দিন জেলার সর্বত্র লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বা হবেন তাদের বাড়ি লকডাউনের পাশাপাশি কঠোর নজরদারি করা হবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত বুধবার সাতক্ষীরায় ৯৩ জনের করোনা পরীক্ষা করে ৫০ জনের করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। সেই হিসেবে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ৫৩ শতাংশ।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আল মাহমুদ বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবি কঠোর নজরদারি করছে। কোন মানুষ যাতে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার করতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ভার্চুয়ালিযুক্ত ছিলেন, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াত, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আল মাহমুদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপী, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু প্রমুখ।