সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাওয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ায় শাল্লা থানার ওসি নাজমুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ হেড কোয়ার্টার।
মঙ্গলবার রাতে শাল্লা থানার ওসিকে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি নিকটবর্তী দিরাই থানার অফিসার্স ইনচার্জ আশরাফুল ইসলামকেও স্থান ত্যাগ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাকে দিরাই থেকে সরিয়ে মৌলভীবাজারে বদলি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাল্লার হামলায় সরকারি দলের লোক জড়িত: ডা. জাফরুল্লাহ
এর আগে গত ৩ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের বিশেষ তদন্ত দল ঘটনাস্থলে আরও তথ্য জানার জন্য তৎপরতা চালায়।
এসময় তদন্তে বিস্তর জেনে রিপোর্ট জমা দেয়া হলে পুলিশ সদর দপ্তর সার্বিক বিশ্লেষণ শেষে ব্যবস্থা নেয়।
সদর দপ্তরের নির্দেশনার খবরের পাশাপাশি সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিতিতে একটি ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এই মাহফিলে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা মামুনুল হক। এরপর শাল্লা উপজেলার নোয়াগাওয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী ঝুমন দাশ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে আল্লামা মামুনুল হককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও ব্যাঙ্গাত্মক স্ট্যাটাস দেয়। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ঝুমন দাশকে আটক করলেও ধর্মীয় উসকানি দিয়ে লাঠিসোটা হাতে পরদিন নোয়াগাওয়ে হামলা চালায় শতাধিক মানুষ। এসময় ভাঙচুর করা হয় অর্ধশত বাড়িঘর।
ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছিলেন হামলাকারীরা মামুনুল হকের অনুসারী। তবে এই ঘটনাচক্রে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ উঠে স্থানীয় স্বাধীন মেম্বারের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাধীন মেম্বার ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া ঝুমনের মধ্যে বিল নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ ছিল, আর এই সুযোগটি স্বাধীন মেম্বার কাজে লাগিয়ে ঝুমনকে “শিক্ষা” দিতে ধর্মীয় উসকানি দিয়েছিলেন। ঘটনার পর ২টি আলাদা মামলায় ১৫শ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় ৩৩ জনকে। বিষয়টি বর্তমানে বিচারাধীন।
আরও পড়ুন: শাল্লার ঘটনায় ৫ দিনের রিমান্ডে স্বাধীন