সিলেটে সোমবার দিনভর দুর্ভোগের পর রাতে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের সাথে বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধর্মঘট স্থগিতের কথা জানান পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সরকার।
তিনি বলেন, ‘ আমাদের পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আমরা তাদের উপর বিশ্বাস রেখে ধর্মঘট স্থগিত করেছি। অর্থাৎ বিভাগীয় কমিশনারের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে আবার ধর্মঘট ডাকা হবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘটের তৃতীয় দিনেও স্থবির বেনাপোল বন্দর
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় ফেডারেশন নেতাদের সাথে সিলেটের নতুন বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান জরুরি বৈঠকে বসেন। এতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার বিকালে নগরীর দক্ষিণ সুরমাস্থ সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
সোমবার সকাল থেকে সিলেটে শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে পুরো সিলেট বিভাগে বাস ট্রাক, অটোরিকশাসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ ছিল। এমনকি নগরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলেও বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবচেয়ে বেশি। হেঁটেই অনেককে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে হয়।
এর আগে সিলেটে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ সড়ক
পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি। কিন্তু তাদের পাঁচ দফা দাবি আদায় হয়নি বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। ফলে সোমবার থেকে কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম না কমলে চলবে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট
তাদের দাবিগুলো হলো- সিলেট জেলা অটোটেম্পু, অটোরিকশা চালক শ্রমিক জোটের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা, ‘প্রহসনের নির্বাচন’ ও ‘বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায়’ ঘোষিত কমিটি বাতিল করা ও মনোনয়ন ফি বাবত আদায়কৃত সকল টাকা ফেরত দেয়া, সিলেটের আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপপরিচালককে প্রত্যাহার, সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ওপর দায়েরকৃত মামলাসমূহ প্রত্যাহার, ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, মেয়াদ উত্তীর্ণ শেরপুর, শেওলা, লামাকাজী, শাহপরাণ ও ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু থেকে টোল আদায় বন্ধ এবং চৌহাট্টাসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে কার, মাইক্রোবাস, লেগুনা, সিএনজি অটোরিকশসহ সকল প্রকার গাড়ির পার্কিং ব্যবস্থা করা।