চুরির অপবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে শারমীন আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে দুই ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় শারমীন শনিবার রাতেই চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই বিষ্ণুপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় এবং রবিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা ও একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য হোসেন মিয়া।
আরও পড়ুন: যশোরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণা, অস্ত্রসহ যুবক গ্রেপ্তার
মামলার সূত্রে জানা যায়, মোবাইল চুরির অপবাদে বৃহস্পতিবার অভিযুক্তরা শারমীন আক্তারকে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের হুমায়ুনের বাড়িতে ডেকে নেন। সেখানে উপস্থিত হওয়ার পরই শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। এসময় ইসহাক মোল্লা তার নাক, মুখ ও চোখে গামছা বেঁধে শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম পানি ঢেলে দেন। লাঠি দিয়ে হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে জখম করেন।
শারমীন আক্তার বলেন, ‘ইউপি সদস্য ইসহাক মোল্লা ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন প্রায় সময়ই কুপ্রস্তাব দিতেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলতেন। তাদের সঙ্গে দেখা না করায় চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। মামলা করার পর হুমকি দিচ্ছেন তারা। আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।’
বিজয়নগর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান জামিল খান বলেন, ‘কয়েকদিন আগে বিষ্ণুপুরের এক চৌকিদারের স্ত্রীকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয়। পরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার নির্দেশে বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন ওই নারীকে ব্যাপক মারধর করে। চৌকিদারের স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভিডিও ফুটেজ দেখে সাবেক ও বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।’
অভিযুক্ত বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা বলেন, ‘একটি বাড়িতে স্বর্ণালংকার চুরি হয়। এই ঘটনায় সালিসি সভা হয়। সালিসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই নারীকে মারধর করা হয়েছে।’
অভিযুক্ত বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি এই বিষয়ে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।