সিরাজগঞ্জে ঈদের আগে মহাসড়কের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ না করা হলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে এবার ঘরমুখো যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ বছর মহাসড়কের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান শনাক্ত করেছে জেলা পুলিশ। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে হাটিকুমরুল হয়ে চান্দাইকোনা মহাসড়কের প্রায় ৫১ কিলোমিটার জুড়ে ২০টি স্থান সংস্কারে জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
তবে ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ভয়াবহ যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। প্রতি বছর উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের সব কয়টি জেলার ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের যানবাহনগুলো বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে। এ কারণে বাড়তি চাপ পড়ে এ সংযোগ মহাসড়কে। তবে এ সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সংস্কার করা হবে।
বিশেষ করে বাস ও ট্রাক চালকরা বলছেন যে মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন করা হলে ঈদ যাত্রায় স্বস্তি ফিরবে। উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার মানুষ ঈদযাত্রায় রাজধানী ঢাকা থেকে ফিরতে ব্যবহার করে এ মহাসড়ক। প্রতিদিন এ মহাসড়কে ১৬ থেকে ২০ হাজার যানবাহন চলাচল করছে এবং ঈদে ৩০ থেকে ৪০ হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সংযোগ মহাসড়ক চারলেনে প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ চলছে। এতে ইতোমধ্যেই মহাসড়কে যানজট ও ধীরগতি দেখা দিচ্ছে। এছাড়া নবনির্মিত নলকা সেতুর উত্তরের লেন খুলে দিলেও ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ পুরাতন সেতু দিয়েই চলাচল করছে যানবহন। এ কারণে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যানজটে অতিষ্ঠ সিলেট নগরবাসী
এ বিষয়ে আকতার জেভি প্রকল্পের ম্যানেজার এখলাস উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। মহাসড়কের যেসব স্থানে খানাখন্দ রয়েছে সেসব স্থান দ্রুত মেরামত করা হবে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ১৫ রমজানের মধ্যে চারলেনের নতুন সড়ক খুলে দেওয়া হবে। স্থানীয় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদের আগে মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে সংস্কার কাজ তদারকি করা হচ্ছে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল কবির বলেন, সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা পুলিশের সঙ্গে দুই দফা আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় থেকে চান্দাইকোনো পর্যন্ত ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ঝুকিপূর্ণ স্থান দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে ১০টি মোবাইল টিম, ১৬টি পিকেট টিম কাজ করবে। সেই সঙ্গে মাইকিং ও জিডিটাল সাইনবোর্ড লাগানো হবে। এবার ঈদে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে ১৪৪ জন পুলিশ সদস্য যানজট নিরসনে অংশ নিচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান বলেন, ঈদ উপলক্ষে যানজট মুক্ত রাখতে জেলা পুলিশের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মহাসড়কে ১৫ থেকে ১৮টি মোবাইল টিম থাকবে। ইতোমধ্যেই যানজট নিরসনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, মহাসড়কে প্রায় ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সাসেক-২’র কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে। সেসব স্থান তারা দ্রুত সংস্কার করে দিবে। ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্নে করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন: আশপাশের সড়ক বন্ধ হওয়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি