গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ধকল যেতে না যেতেই সিলেটে আবারও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। এই বৃষ্টি আরও ১৫ দিন অবহ্যাত থাকবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া, ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে। ফলে ঢল নামছে। ঢল আর বৃষ্টিতে সিলেটের নদনদীর পানি বেড়েই চলছে।
পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। ঢল আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে চলতি সপ্তাহেই মাঝারি ধরনের বন্যা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
তাই সম্ভাব্য বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে ঢলে ইতোমধ্যে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এবং বিভিন্ন হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এছাড়া বাড়ছে নদীর পানিও।
শুক্রবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে।
বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিফ আহমেদ জানান, নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। সামান্য বাড়লেই তা অতিক্রম করবে।
সিলেটে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি, আবারও বন্যার আশঙ্কা
তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করছে।
সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে ১২ দশমিক ৬৮ এবং সুরমা নদীর পয়েন্টে ১০ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার বিপদসীমার মধ্যে ৯ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একই অবস্থা এ দুই নদীর অন্যান্য পয়েন্টেও।
শুক্রবার সিলেটে ১৩৫ মিলিমিটার এবং এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ২২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারী বর্ষণে নগরীতে জলাবদ্ধতাও দেখা দিচ্ছে।
এছাড়া শনিবার সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
এর আগে গতবছর সিলেটে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। এতে তলিয়ে গিয়েছিলা সিলেটের ৭০ শতাংশ এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার প্রায় সব মানুষ।
বন্যায় ভেঙে যায় প্রায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি। গতবারের বন্যার ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্ষতিগ্রস্তরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ১৩৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আর সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৭৫ মিলিমিটার। এর আগে বুধবার সকাল ৬ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা সিলেটে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে পাহাড়ি ঢল নামতে পারে।
বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কা থেকে বৃহস্পতিবার সিলেটের জেলা প্রশাসন জরুরি সভা করে আগাম বন্যার প্রাথমিক প্রস্তুতিও নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা দুর্গত এলাকায় কি ধরনের খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠাবেন