সিলেটে টিলা ধসে আটকে পড়া একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
সোমবার (১০ জুন) ভোর ৬টার দিকে সিলেট মহানগরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেজরটিলার চামেলীবাগ আবাসিক এলাকায় টিলা ধসের ঘটনাটি ঘটে। এরপর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই এলাকার একটি বাসাবাড়ি থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন- আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী রুজি বেগম (২৫) ও তাদের ৬ মাস বয়সী শিশুসন্তান তানিম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী।
ওই বাড়িতে দুইটি পরিবার থাকতেন। ভূমি ধসে ঘরের নিচে দুই পরিবারের পাঁচজন আটকা পড়েন।
আরও পড়ুন: ৭ দিন বন্ধ থাকার পর সিলেটের সব পর্যটন কেন্দ্র চালু
প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় এক পরিবারের দুইজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে বাকি তিনজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য সেনাবাহিনী নিয়োগের ঘোষণা দেন। এর কিছুক্ষণ পরই সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন।
ঘটনাস্থলে উদ্ধারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে উদ্ধার কার্যক্রম হাতে চালাতে হয়। যে কারণে আটকা পড়াদের উদ্ধার করতে দেরি হয়ে যায়।
সকাল ১০টার দিকে শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে খবর পেয়ে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন।’
ভারী বৃষ্টির কারণে টিলার মাটি ধসে একটি আধপাকা ঘরের ওপরে পড়ে। এর নিচে ৩ জন লোক আটকা পড়েছেন। ঘরটি টিলার নিচেই ছিল বলে জানান ওসি হারুনূর রশীদ।
আরও পড়ুন: সিলেটের বন্যাকবলিত অঞ্চলের এইচএসসি পরীক্ষা পরে নেওয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
সিসিকের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ভোর ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। এই বাসায় দুই ভাই তাদের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। ভূমিধসে ঘরের নিচে ৬ জন আটকা পড়েন। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আমরা এসে এক ভাই, তার স্ত্রী ও তাদের সন্তানকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে পেরেছি। তবে আরেক ভাই, তার স্ত্রী ও ১ বছরের সন্তান এখনও আটকা রয়েছেন।’
‘বৃষ্টির কারণে উদ্ধার আভিযান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া রাস্তা ছোট হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের গাড়ি ঢুকতে পারছে না। ফলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই হাত দিয়েই উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, মেডিকেল চেকআপের জন্য সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ছিলেন। লন্ডনে যাওয়ার পরই বন্যার কবলে পড়ে সিলেট মহানগর। নগরবাসী প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ায় মেডিকেল চেকআপ পুরোপুরি শেষ না করেই সোমবার সিলেট ফিরে এসেছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান।
এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি ফ্লাইটে লন্ডন থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সরাসরি ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিসিক মেয়র।