সিলেট নগর ভবনের ছাদ থেকে স্টিলের পাইপ পড়ে এক সেনাসদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান প্রকৌশলীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার (৩ জুন) রাতে সিলেট সেনানিবাসের সেনা সদস্য মো. আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করেন।
নিহত মো. দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জগিরগোফার রায়পুর গ্রামে। তিনি ল্যান্স করপোরাল হিসেবে সিলেট ক্যান্টনমেন্টের ৫০ ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন।
আসামিরা হলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর, জামাল অ্যান্ড কোং–এর সাইড ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রাজ্জাক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোং–এর মালিক মো. জামাল উদ্দিন, ক্রেনচালক মো. সাদেক।
এছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক এবং ঠিকাদারকেও আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলায় নির্মাণকাজে অবহেলাজনিত অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি জানান, মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবারই ১৭ জনকে আটক করা হয় বলে জানান ওসি।
উল্লেখ্য, এর আগে ৩ জুন শনিবার দুপুরে বন্দরবাজার এলাকার সিটি সুপার মার্কেটের নিচতলা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নগর ভবনের ছাদ থেকে লোহার পাইপ পড়ে মো. দেলোয়ার হোসেন নামের এক সেনাসদস্য আহত হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের ১২ তলার ছাদ থেকে হঠাৎ করেই একটি স্টিলের পাইপ সিটি মার্কেটের ভেতরে ওই সেনা সদস্যের মাথায় এসে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এ ঘটনার পরপরই সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে রাতে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলার পর রবিবার তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করেন মেয়র। কমিটি থেকে প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
পুনর্গঠিত তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হককে। এই কমিটিকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুনর্গঠিত তদন্ত কমিটি:
আহ্বায়ক সিসিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ বদরুল হক, সদস্য সিসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) মো. মতিউর রহমান খান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জয়নাল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম, গণপূর্ত অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়, সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম ও সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) রাজ উদ্দিন খান।
আরও পড়ুন: দুই মামলায় মামুনুল হকের জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ